বাংলাদেশের সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন: ২০২৪ সালের একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে রাজনৈতিক ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ব্যাপক বৃদ্ধি ঘটে। এর ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ও আতঙ্কিত হয় দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। বাড়িঘর, মন্দির ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। এই সহিংসতা ও নিরাপত্তাহীনতার প্রতিবাদে এবং তাদের অধিকার আদায়ের দাবিতে ৯ আগস্ট থেকে সমগ্র বাংলাদেশে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন শুরু হয়।
এই আন্দোলনটিতে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ, চেতন সনাতনী নাগরিক ও হিন্দু জাগরণ মঞ্চসহ বেশকিছু সংগঠন সম্মিলিতভাবে নেতৃত্ব দেয়। আন্দোলনকারীরা ৮ দফা দাবি তুলে ধরে, যার মধ্যে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচারের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, পৃথক সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন, দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন প্রভৃতি অন্তর্ভুক্ত ছিল।
আন্দোলন ৯ আগস্ট দিনাজপুর ও ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে শুরু হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। ১০ আগস্ট থেকে সারা দেশে ব্যাপক আকার ধারণ করে। ঢাকার শাহবাগ, চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, বরিশাল, শরীয়তপুর, নারায়ণগঞ্জ, নাটোর, টাঙ্গাইল, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, কক্সবাজার, ফরিদপুর, পঞ্চগড়, চাঁদপুর, কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহসহ দেশের প্রায় সব জেলায় গণ অবস্থান, বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
১৩ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আশ্বাসে আন্দোলনের কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে আশ্বাসের দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলন পুনরায় শুরু হয় এবং বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জেলায় সমাবেশ ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। এই আন্দোলন ২০২৪ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে চালিয়ে যাওয়া হয়। তবে, আন্দোলনের পরবর্তী অগ্রযাত্রা ও দাবি বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্যের অভাব রয়েছে। আমরা আশা করি, ভবিষ্যতে আরও তথ্য পাওয়ার পর এই বিবরণটি আরও সমৃদ্ধ করা যাবে।