বেনাপোল কাস্টমস হাউস: বাংলাদেশের যশোর জেলার শার্শা উপজেলায় অবস্থিত বেনাপোল স্থলবন্দরের কেন্দ্রীয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। ১৯৪৭ সালে প্রথম চেকপোস্ট স্থাপিত হলেও, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট হিসেবে গুরুত্ব পায় এবং ভারত-বাংলাদেশ যোগাযোগের প্রধান মাধ্যমে পরিণত হয়। ২০০০ সালে স্থলবন্দরের কার্যক্রম বৃদ্ধির সাথে সাথে পূর্ণাঙ্গ কাস্টমস হাউস স্থাপিত হয়। বর্তমানে দৈনিক প্রায় ১০,০০০ যাত্রী এই চেকপোস্ট ব্যবহার করে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত করে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউস দীর্ঘদিন ধরে দালালদের দ্বারা হয়রানির শিকার ছিল। তবে অত্যাধুনিক স্ক্যানিং মেশিন, সিসি ক্যামেরা স্থাপন এবং সশস্ত্র আনসার ও আমর্ড পুলিশ মোতায়েনের মাধ্যমে কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনকে দালালমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গত ৬ মাসে ১১ লাখ ২০ হাজার যাত্রী ভারতে যাতায়াত করেছে এবং ১১০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। শিশু, প্রতিবন্ধী ও ক্যান্সার রোগীদের ভ্রমণ কর মওকুফ রয়েছে। পাসপোর্ট ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না।
রাজস্ব ফাঁকি রোধে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কঠোর নজরদারি ও তদারকি অব্যাহত রেখেছে। অনেক ঘোষণাবহিভূত পণ্য জব্দ করা হয়েছে, আর রাজস্ব ফাঁকির জন্য জরিমানা আরোপ করা হচ্ছে। বিগত বছরগুলিতে রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। যাত্রী সেবার মান উন্নয়নের জন্য ইমিগ্রেশনের ডেস্কের সংখ্যাও বৃদ্ধি করা হয়েছে। বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার, ডেপুটি কমিশনার, যুগ্ম কমিশনারসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা এই কাজে নিয়োজিত।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের সামনে কাস্টমস-বিজিবি যৌথ চেকপোস্ট রয়েছে। সম্প্রতি ৯৪ টি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। বেনাপোল বন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বছরে ৩০ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হয়। আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে গতিশীলতা বৃদ্ধি এবং রাজস্ব ফাঁকি রোধের জন্য কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কঠোর অবস্থানে রয়েছে।