শার্শা উপজেলা: যশোরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ
বাংলাদেশের যশোর জেলার অন্তর্গত শার্শা উপজেলা, প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক দিক দিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। ৩৩৬.২৮ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই উপজেলা ২২°৫৫´ থেকে ২৩°১২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৫১´ থেকে ৮৯°০১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। উত্তরে চৌগাছা উপজেলা ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, দক্ষিণে সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলা, পূর্বে ঝিকরগাছা উপজেলা এবং পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য এর সীমানা।
- *ঐতিহাসিক গুরুত্ব:** শার্শা উপজেলার নামকরণের সঠিক ইতিহাস অজানা হলেও জনশ্রুতি আছে, শার্শা মৌজার নামানুসারে উপজেলার নামকরণ হয়েছে। ১৯১০ সালে শার্শা থানা গঠিত হয় এবং ৩ জুলাই ১৯৮৩ সালে তা উপজেলায় রূপান্তরিত হয়। মুক্তিযুদ্ধে বেনাপোল সীমান্তের কাছে কাগজ পুকুর এলাকায় পাকবাহিনীর সাথে সংঘর্ষে অনেক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের সমাধিও এই উপজেলায় অবস্থিত।
- *ভৌগোলিক অবস্থান ও জনসংখ্যা:** বেতনা, দাউদখালী, ইছামতি ও কুদলা নদী এই উপজেলায় প্রবাহিত। বনমান্দার বিল, জিলা বিল ইত্যাদি বিলও রয়েছে। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, জনসংখ্যা প্রায় ৩৪১,৩২৮; এর মধ্যে পুরুষ ১৭০,০৩৩ এবং মহিলা ১৭১,২৯৫। ধর্মীয়ভাবে বেশিরভাগ মানুষ মুসলিম।
- *অর্থনীতি:** শার্শার অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর। ধান, পাট, আলু, গম প্রধান ফসল। এছাড়াও, আম, কাঁঠাল, কুল প্রভৃতি ফল উৎপাদিত হয়। বেনাপোল স্থলবন্দর এই উপজেলার অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আফিল জুট উইভিং মিলস লিঃ এবং আফিল এগ্রো লিঃ নামে দুটি বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠানও এখানে অবস্থিত। শিক্ষার হার ৪৯.৮%।
- *প্রশাসনিক বিভাগ:** শার্শা উপজেলায় ১টি পৌরসভা এবং ১১টি ইউনিয়ন রয়েছে। বিভিন্ন সরকারি, আধা-সরকারি ও বেসরকারি অফিস শার্শা উপজেলা পরিষদ কার্যালয় কেন্দ্র করে অবস্থিত।
- *উল্লেখযোগ্য স্থান:** বেনাপোল স্থলবন্দর, শার্শা মডেল প্রাইমারি স্কুল, শার্শা পাইলট হাইস্কুল, নাভারন ডিগ্রি কলেজ, বুরুজ বাগান মাধ্যমিক বিদ্যালয়, নাভারন হাইস্কুল, পাটবাড়ি হিন্দু আশ্রম।
শার্শা উপজেলা যশোর জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যার ঐতিহাসিক, ভৌগোলিক এবং অর্থনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম।