গণধর্ষণ একটি ভয়াবহ অপরাধ যা দুই বা ততোধিক ব্যক্তি কর্তৃক একজন ব্যক্তির উপর যৌন নির্যাতন হিসেবে সংজ্ঞায়িত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই অপরাধের ঘটনা প্রতিবেদন করা হলেও সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া দুষ্কর। অনেক ক্ষেত্রে ধর্ষণের শিকাররা তাদের অভিজ্ঞতা প্রকাশ করতে দ্বিধা বোধ করেন, যার ফলে অনেক ঘটনা অপ্রকাশিতই থেকে যায়।
গণধর্ষণের পেছনে বিভিন্ন কারণ কাজ করতে পারে। এতে জড়িত ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ কেউ মদ্যপান বা মাদকাসক্তির প্রভাবে এমন কাজ করে। অন্যরা রাগ, হিংসা বা ক্ষমতা প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে এমন অপরাধ করে থাকে। কিছু ক্ষেত্রে, গণধর্ষণ জাতিগত বা ধর্মীয় ঘৃণা থেকেও উদ্ভূত হতে পারে। যেমন, ইরানে কিছু ঘটনার ক্ষেত্রে হিজাব পরিধান না করার জন্য ধর্ষণের শিকারদের দোষারোপ করা হয়েছে।
বিভিন্ন দেশে গণধর্ষণের ঘটনায় আলাদা আলাদা আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কিছু দেশে এটির জন্য মৃত্যুদণ্ডও রয়েছে। তবে অনেক দেশে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযোগ দায়েরের হার কম এবং বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘ ও জটিল হওয়ায় শাস্তির নিশ্চয়তাও নেই।
গণধর্ষণের ফলে শুধু যৌন নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিই ক্ষতিগ্রস্ত হন না, তার পরিবারও মানসিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই অপরাধের ফলে অনেক নারী মানসিক চিকিৎসার আশ্রয় নেন অথবা আত্মহত্যার চিন্তাভাবনায় আক্রান্ত হন।
গণধর্ষণ রোধে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আইনি ব্যবস্থার উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষা ও সচেতনতার মাধ্যমে সমাজে যৌন নির্যাতন সম্পর্কে সঠিক ধারণা ছড়িয়ে দেওয়া জরুরী। এছাড়াও, যৌন নির্যাতনের শিকাররা যেন সাহস করে অভিযোগ দায়ের করতে পারে তার জন্য সহায়তা প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে। পুলিশ প্রশাসনকেও অপরাধীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। আইনি ব্যবস্থার অভাব এবং বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘতা এই অপরাধের বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে, যার জন্য আইনি সংস্কার প্রয়োজন। এছাড়াও, সামাজিক দায়িত্ববোধ ও মানবিকতার মাধ্যমে এই অপরাধ রোধে সকলের সক্রিয় ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।