১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ) পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের দোসরদের দ্বারা সংঘটিত গণহত্যা ছিল ইতিহাসের এক অন্ধকার অধ্যায়। এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল বলে অনুমান করা হয়। ২৫শে মার্চ রাতে অপারেশন সার্চলাইট এর মাধ্যমে শুরু হওয়া এই হত্যাকাণ্ড ৯ মাস ধরে চলে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, যশোর, ময়মনসিংহ, কুষ্টিয়া সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিরীহ মানুষের ওপর নির্মম অত্যাচার, গণধর্ষণ, এবং হত্যা চালানো হয়। বুদ্ধিজীবীদের গণহত্যাও এই ঘটনার এক ভয়াবহ দিক।
পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পাশাপাশি রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস সহ সহযোগীদের অংশগ্রহণ ছিল এই গণহত্যার সাফল্যের পেছনে। তাদের লক্ষ্য ছিল বাঙালি জাতিকে দমন করা এবং মুক্তিযুদ্ধকে ব্যর্থ করে দেওয়া। তবে, বাঙালি জনগণের প্রতিরোধ এবং ভারতের সহযোগিতা এই গণহত্যাকে থামাতে এবং মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনে সহায়তা করে। ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে এই গণহত্যার অবসান ঘটে।
তবে, এই গণহত্যার জন্য যথাযথ বিচার এখনও সম্পন্ন হয়নি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে গণহত্যা বলে স্বীকৃতি দেয়ার পাশাপাশি, সাংঘাতিক ঘটনার জন্য দায়ীদের উপযুক্ত বিচারের দাবী এখনও জারি আছে। ১৯৭১ সালের গণহত্যা বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অম্লান চিরস্মৃতি হিসেবে অবধি থেকে যাবে।