আবদুল্লাহ নামটি মুসলিম সম্প্রদায়ের একটি জনপ্রিয় নাম। এই নিবন্ধে আমরা উল্লেখযোগ্য কয়েকজন আবদুল্লাহ সম্পর্কে আলোচনা করবো যাদের জীবনী ও কাজের কথা উল্লেখযোগ্য।
মুহাম্মদ আবদুল্লাহ (১৯৩২-২০০৮): লক্ষ্মীপুর জেলার বাঙ্গাখাঁ গ্রামে জন্মগ্রহণকারী এই গবেষক ও অধ্যাপক ১৯৩২ সালের ১ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নোয়াখালী কারামতিয়া মাদ্রাসা, কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। তিনি সিলেট সরকারি মাদ্রাসা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু ও ফারসি বিভাগে অধ্যাপনা করেন। উর্দু ভাষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্য তিনি ‘নিশানে উর্দু খেতাব’ এবং ‘ইব্রাহিম খাঁ স্বর্ণপদক’ লাভ করেন। তিনি ৩৩টি গ্রন্থ রচনা করেন এবং চারশতাধিক প্রবন্ধ/নিবন্ধ প্রকাশ করেন। ২০০৮ সালের ২১ অক্টোবর তাঁর মৃত্যু হয়।
আবদুল্লাহ ফারুক (১৯২৮-১৯৯৭): পাবনায় জন্মগ্রহণকারী এই লেখক, চিন্তাবিদ ও অর্থনীতিবিদ কলকাতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে অধ্যাপনা করেন এবং মার্কেটিং বিষয়ে গবেষণা করেন। তিনি ইউনেস্কোর বৃত্তি পেয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তার বিখ্যাত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে 'রাইস মার্কেটিং' এবং 'বাজারজাতকরণের সমস্যার ওপর একটি পাঠ্যবই'। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ এবং বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালন করেন।
আবদুল্লাহ আল-মামুন সোহরাওয়ার্দী (১৮৭০-১৯৩৫): পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরে জন্মগ্রহণকারী এই পণ্ডিত, রাজনীতিবিদ ও লেখক কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও লন্ডনের গ্রেস ইন থেকে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি বিভাগের প্রধান ও ঠাকুর প্রফেসর ছিলেন। তিনি প্যান ইসলামিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি এবং খিলাফত আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ (১৯৪২-২০১৭): সিলেটে জন্মগ্রহণকারী এই বিখ্যাত ভাস্কর ও চিত্রশিল্পী ঢাকা আর্ট কলেজ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিল্পে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং ‘অপরাজেয় বাংলা’ স্কাল্পচারের জন্য সর্বজনবিখ্যাত। তিনি ‘শিল্পকলা পদক’ ও ‘একুশে পদক’ লাভ করেন।
আবদুল্লাহ আল মামুন (১৯৪২-২০০৮): জামালপুরে জন্মগ্রহণকারী এই নাট্যকার, নাট্যনির্দেশক ও অভিনেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি অসংখ্য মঞ্চনাটক রচনা ও পরিচালনা করেন এবং টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রেও কাজ করেন। তিনি ‘একুশে পদক’সহ বেশ কিছু পুরস্কার লাভ করেন।
শাহ আবদুল্লাহ কিরমানী (রঃ): বাংলায় মুসলিম শাসনের প্রাথমিক পর্বের প্রখ্যাত পীর-দরবেশ। বীরভূম জেলায় সমাহিত।
আবদুল্লাহ আল-মুতী শরফুদ্দিন (১৯৩০-১৯৯৮): সিরাজগঞ্জের ফুলবাড়িতে জন্মগ্রহণকারী জনপ্রিয় বিজ্ঞান লেখক, শিক্ষাবিদ ও প্রশাসক। ঢাকা ও শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রাক্তন সচিব। ২৮টি বই রচনা করেন।
মুহম্মদ আবদুল্লাহ-হিল কাফী (১৯০০-১৯৬০): পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে জন্মগ্রহণকারী রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক ও লেখক। আহলে হাদিস আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন।
লে. জেনারেল আমীর আবদুল্লাহ খান নিয়াজী (১৯১৫-২০০৪): বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কম্যান্ডের অধিনায়ক। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করেন।