হামিদুর রহমান খান নামটি একাধিক ব্যক্তি, সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ করতে পারে। প্রদত্ত তথ্য অনুসারে, তিনটি হামিদুর রহমান খান সম্পর্কে তথ্য পাওয়া গেছে:
- *১. হামিদুর রহমান (চিত্রশিল্পী):** ১৯২৮ সালে পুরান ঢাকার ইসলামপুরে জন্মগ্রহণকারী এই হামিদুর রহমান বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী ছিলেন। তিনিই ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত শহীদ মিনারের নকশা করেছিলেন। ১৯৮০ সালে তিনি একুশে পদক লাভ করেন এবং ১৯৮৮ সালের ১৯শে নভেম্বর কানাডার মন্ট্রিলে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ঢাকা আর্টস স্কুল (বর্তমান চারুকলা ইন্সটিটিউট), প্যারিসের ইকোল দ্য বোজ আর্টস এবং লন্ডনের সেন্ট্রাল স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড ডিজাইন-এ শিক্ষা লাভ করেন। শহীদ মিনারের নকশায় খ্যাতনামা শিল্পী নভেরা আহমেদ তার সহযোগিতা করেছিলেন। তার 'মাদার অ্যান্ড স্মোক', 'ফ্লাওয়ার ইন মাই বডি', 'বোট' এবং 'সানফ্লাওয়ার' চিত্র বিশেষ পরিচিত। ২০০৭ সাল থেকে তার নামে হামিদুর রহমান পুরস্কার প্রদান করা হয়।
- *২. এম হামিদুল্লাহ খান (মুক্তিযোদ্ধা ও রাজনীতিবিদ):** ১৯৩৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণকারী এম হামিদুল্লাহ খান বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তিনি ছিলেন পাকিস্তান বিমান বাহিনীর কমিশন্ড অফিসার। স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তাকে বীর প্রতীক উপাধিতে ভূষিত করা হয়। যুদ্ধের পর তিনি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে যোগদান করেন এবং LPR গ্রহণের পর রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এবং পরে আওয়ামী লীগের সাথে যুক্ত ছিলেন। ১৯৭৯, ১৯৯১, ও ১৯৯৬ সালে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে বেশ কয়েকটি বইও রচনা করেছেন। ২০০১ সালে তিনি ঢাকা-১৫ আসন থেকে একই আসনের প্রার্থী মিজানুর রহমান সিনহার কাছে পরাজিত হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি পুনরায় বিএনপি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ঢাকার বনানী এলাকার ২৩ নম্বর সড়কটি তার নামে নামকরণ করা হয়েছে। ২০১১ সালের ৩০শে ডিসেম্বর ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
- *৩. মোহাম্মদ হামিদুর রহমান (বীর শ্রেষ্ঠ):** ১৯৫৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণকারী এই হামিদুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর শ্রেষ্ঠ। মাত্র ১৮ বছর বয়সে তিনি শহীদ হন। তিনি ১৯৭১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে যোগ দেন এবং মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। তিনি মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ থানার ধলই বর্ডার আউটপোস্টে যুদ্ধ করেন। ১৯৭১ সালের ২৮ অক্টোবর তিনি ধলই সীমান্ত ফাঁড়ি দখল করার অভিযানে শহীদ হন। ২০০৭ সালে তার দেহাবশেষ ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয় এবং ঢাকার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। তার গ্রামের নাম পরিবর্তন করে ‘হামিদনগর’ রাখা হয়েছে।