জামিলা খাতুন: বাংলাদেশের মার্শাল আর্টস তারকা
৪৮ বছর বয়সী জামিলা খাতুন বাংলাদেশের একজন অসাধারণ মার্শাল আর্টস ক্রীড়াবিদ। দুই সন্তানের জননী এই নারী বিশ্ব জুজুৎসুতে তৃতীয় স্থান অধিকার করে আছেন এবং এশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকা- এই তিন মহাদেশেই পদক জিতে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছেন। তার এই অসাধারণ কীর্তি বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে বিরল।
- *প্রাথমিক জীবন ও ক্যারিয়ারের সূচনা:**
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার কবুতরখোলা গ্রামের বাসিন্দা জামিলা খাতুন ছয় ভাইবোনের মধ্যে চতুর্থ। ছোটবেলা থেকেই মার্শাল আর্টের প্রতি তার অদম্য আগ্রহ ছিল। মাত্র ১৬ বছর বয়সে ১৯৯০ সালে জুডো দিয়ে তার ক্যারিয়ার শুরু হয়। পরবর্তীতে কারাতে, উশু, পেনচাক সিলাত এবং জুজুৎসুতে প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি একাধিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন এবং অসংখ্য পদক জয় করেন।
- *সাফল্যের ইতিহাস:**
জামিলা খাতুন এ পর্যন্ত ৩৭টি স্বর্ণ, ২৭টি রৌপ্য এবং ৩২টি ব্রোঞ্জ পদক জিতেছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশ আনসারের হয়ে কারাতে, জুডো, উশু ও কুস্তিতে জাতীয় আসরে ২৮টি স্বর্ণ, ১৫টি রৌপ্য এবং ১৮টি ব্রোঞ্জ পদক জয় করেছেন। জুজুৎসু ও পেনচাক সিলাতে তিনি তিন মহাদেশেই পদক জিতেছেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, নভেম্বর মাসে গ্রিসের হেরাক্লিয়নে বিশ্ব জুজুৎসু চ্যাম্পিয়নশিপে ঊর্ধ্ব-৭০ কেজি ক্যাটাগরিতে স্বর্ণপদক জয় করে তিনি সকলকে অভিভূত করেন।
- *গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের লক্ষ্য:**
জীবনের এত সফল ক্যারিয়ারের পরও জামিলা খাতুন এখন গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম লেখাতে আগ্রহী। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ও বাংলাদেশ আনসারের সহযোগিতা পেলে তিনি এই লক্ষ্য পূরণ করতে পারবেন বলে আশাবাদী।
- *ব্যক্তিগত জীবন:**
জামিলা খাতুন ৫০ বছর বয়স পর্যন্ত খেলা চালিয়ে যেতে চান। তিনি বলেন, বয়স কিংবা ওজন কখনো তার খেলায় বাধা হতে পারেনি। খেলাধুলার মাধ্যমেই তিনি আনন্দ খুঁজে পান।
- *সম্মাননা:**
জামিলা খাতুন ২০১৮ সালে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর 'প্রেসিডেন্ট আনসার (সেবা) পদক' লাভ করেন।
জামিলা খাতুন: কিশোরগঞ্জের এক শতবর্ষী মহিয়সী নারী
আরেক জামিলা খাতুন ছিলেন কিশোরগঞ্জের যশোদল স্বল্পদামপাড়া গ্রামের একজন শতবর্ষী মহিয়সী নারী। ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ সালে তিনি ইন্তেকাল করেন। তিনি মরহুম মাওলানা হাফিজ উদ্দিন আহাম্মদের স্ত্রী ছিলেন এবং মাওলানা নূরুল ইসলাম জেহাদী এবং ইতিহাসবিদ, লেখক ও গবেষক মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলামের মা ছিলেন। তিনি বাংলা ভাষা ছাড়াও আরবি, উর্দু, ফারসি ও নাগরী ভাষায় দক্ষ ছিলেন। তিনি ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত সাহিত্য সম্মেলনে দীর্ঘ বক্তব্য রাখেন এবং ২০০৮ সালে ইরান দূতাবাস কর্তৃক সম্মানিত হন।