বাংলাদেশে ও ভারতে সোনা পাচারের চিত্র: এক নজরে
সোনা, মূল্যবান এই ধাতু, অনেক কাল ধরেই অবৈধ পাচারের এক প্রধান মাধ্যম। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে এই অবৈধ ব্যবসা বহুকাল ধরে চলে আসছে। বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে সোনার বার, অলংকার, বিস্কুট ইত্যাদি পাচার করা হয়।
ভারতে সোনা পাচার: ভারতের উচ্চ চাহিদার কারণে সেখানে সোনা পাচারের ঘটনা বেশি ঘটে। মুম্বাই বিমানবন্দর, কলকাতা বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন স্থানে শুল্ক কর্মকর্তারা বিভিন্ন কৌশলে লুকিয়ে রাখা সোনা উদ্ধার করেছেন। মলদ্বার, পেট, বেল্ট, ওয়াশিং মেশিন, ফলের রসের যন্ত্র, টয়লেটের ময়লা ঝুড়ি - সব জায়গাতেই সোনা লুকিয়ে রাখার উদাহরণ পাওয়া গেছে। এছাড়াও, বড় ব্যাংকনোট বাতিলের পর ও বিমানবন্দরে ব্যাপক সোনা উদ্ধারের ঘটনা ঘটে। ডিআরআই ২০১৪ সাল থেকে আড়াই বছরে সাত হাজার কিলোগ্রামের বেশি পাচার সোনা উদ্ধারের কথা জানিয়েছে।
বাংলাদেশে সোনা পাচার ও ভারতে পাচার: বাংলাদেশেও সোনার চোরাচালানের ঘটনা ঘটে। ঢাকা থেকে খুলনা হয়ে সাতক্ষীরা, যশোর ও বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে ব্যাপক সোনা পাচার হচ্ছে বলে জানা গেছে। পুলিশ ও বিজিবি বিভিন্ন সময় সোনার বার উদ্ধার করেছে। ঢাকা-খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের লবণচরা থানা এলাকা এই পাচারের জন্য প্রধান রুট হিসাবে কাজ করে। পাচারকারীরা পায়ুপথ, জুতার তলাসহ বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করে। বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (BAJUS) এর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণে সোনা পাচার হয়। শাহজালাল বিমানবন্দরসহ দেশের তিন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে দেশে আসা সোনাও ভারতে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
পাচারের পদ্ধতি: পাচারকারীরা বিভিন্ন নতুন কৌশল বের করছে। মলদ্বারে, শরীরের ভিতর, পোশাক, ব্যাগ, ইলেকট্রনিক সামগ্রী, খাবারের প্যাকেট, এমনকি ওয়াশিং মেশিনের ভেতরেও সোনা লুকিয়ে রাখার ঘটনা ধরা পড়েছে। এই কৌশলগুলোর কারণে ধরা পড়া মুশকিল হয়ে পড়ে।
মূল হোতা শনাক্তকরণে সমস্যা: অনেক ক্ষেত্রে ধরা পড়ে শুধুমাত্র পাচারের বাহকরা। মূল হোতাদের শনাক্ত করা এবং তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া কঠিন হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সদস্যের ও এই সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে।
রাজস্ব হ্রাস: সোনা পাচারের ফলে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে। এই চোরাকারবার রোধ করার জন্য কঠোর আইন এবং কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন।