অবৈধ ব্যবসা

আপডেট: ৫ জানুয়ারী ২০২৫, ৯:১০ পিএম

বাংলাদেশে অবৈধ ব্যবসার বিস্তৃত নেটওয়ার্ক একটি জটিল সমস্যা যা দেশের অর্থনীতি, সামাজিক কাঠামো এবং জনসাধারণের সুরক্ষার উপর গভীর প্রভাব ফেলে। এই প্রবন্ধে আমরা অবৈধ ব্যবসার বিভিন্ন রূপ, তাদের পেছনের কারণ এবং এগুলো মোকাবেলার জন্য নেওয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে আলোচনা করবো।

প্রসাধনী ও নকল পণ্যের ব্যবসা: পুরান ঢাকার চকবাজার, লালবাগ, ইসলামবাগ, ইমামগঞ্জ ও নবাবপুর এলাকা নকল প্রসাধনী ও অন্যান্য পণ্যের পাইকারি বাজার হিসেবে দেশজুড়ে পরিচিত। এখানে অবৈধভাবে প্রসাধনী, প্লাস্টিকের পণ্য, রাসায়নিক ও ওষুধের কারখানা ও গুদাম গড়ে তোলা হয়েছে। র‌্যাবের অভিযানে বেশ কিছু কারখানা বন্ধ ও সিলগালা করা হলেও, এই ব্যবসা পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। ২০১৬ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে বিএসটিআই ৯৪টি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা, ৮টি কারখানা সিলগালা এবং ২৭ জনকে কারাদণ্ড দিয়েছে। চুড়িহাট্টায় অবৈধ সুগন্ধি কারখানার অগ্নিকাণ্ডে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ: দেশে বৈধ মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান ২৩৫টি থাকলেও, হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠান অবৈধভাবে ব্যবসা চালাচ্ছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারীতে সিআইডি রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৪ জনকে গ্রেফতার করে এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ ও বিদেশি মুদ্রা জব্দ করে। এই অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসায় প্রতিদিন ৭০-৭৫ লাখ টাকা সমমূল্যের বিদেশি মুদ্রা লেনদেন হচ্ছে বলে অনুমান করা হয়। অনেক প্রতিষ্ঠান অফিস গুটিয়ে ফোনে ফোনে অবৈধ লেনদেন চালাচ্ছে।

অবৈধ ফরেক্স ট্রেডিং: অনলাইনে বৈদেশিক মুদ্রা কেনাবেচা বা ফরেক্স ট্রেডিংয়ের রমরমা ব্যবসা চলছে। এতে একদিকে দেশ থেকে অর্থ পাচার হচ্ছে, অন্যদিকে মানুষ প্রতারিত হচ্ছে। এমটিএফইর মতো প্রতিষ্ঠান অনলাইনে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং করে বিপুল অর্থ নিয়ে পালিয়েছে। ফেসবুক ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনেক প্রতিষ্ঠান এ ধরনের ব্যবসা চালায়। ২০২০-২১ থেকে ২০২১-২২ সালে ক্রেডিট কার্ড ও এমএফএসের মাধ্যমে লেনদেন অনেক বেড়েছে। এই ব্যবসায় ৫০,০০০ এর বেশি ব্রোকার জড়িত বলে অনুমান করা হয়।

অবৈধ মাদক ও অস্ত্র ব্যবসা: মিরপুরের পল্লবী আলেকদি ঝিলপাড় বস্তিতে অবৈধ মাদক ও অস্ত্রের ব্যবসা চলছে। এটি সাবেক এমপি ইলিয়াস মোল্লার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের জমি দখল করে এই বস্তি তৈরি করা হয়েছে।

সরকারি পদক্ষেপ: সরকার অবৈধ ব্যবসার বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রয়োজনীয় আইন, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, সামাজিক সচেতনতা এবং বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাব এই ব্যবসা বন্ধ করার পথে বড় বাধা। বিটিআরসি, সিআইডি, র‌্যাব এবং বিএসটিআই এসব অভিযান পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে।

এই প্রবন্ধে বর্ণিত তথ্যগুলি বিভিন্ন সূত্র থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে আরও তথ্যের জন্য আমরা আপনাকে পরবর্তীতে আপডেট করব।

মূল তথ্যাবলী:

  • পুরান ঢাকায় নকল প্রসাধনী ও অন্যান্য পণ্যের ব্যাপক ব্যবসা চলছে।
  • হাজারের বেশি অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম চালাচ্ছে।
  • অনলাইন ফরেক্স ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে ব্যাপক অর্থ পাচার হচ্ছে।
  • মিরপুরে অবৈধ মাদক ও অস্ত্র ব্যবসা চলছে।
  • সরকার অবৈধ ব্যবসার বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - অবৈধ ব্যবসা

১ জানুয়ারী ২০২৪, ৬:০০ এএম

সাবেক আওয়ামী লীগ এমপি ইলিয়াস মোল্লার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে।