শীতকালীন পর্যটন: বাংলাদেশের উষ্ণ আতিথেয়তা
সুজলা, সুফলা, শস্যশ্যামলা বাংলাদেশ। ছোটবেলা থেকেই আমরা এই অপরূপ সৌন্দর্যের কথা শুনে বড় হয়েছি। বালুময় মরুভূমি আর বরফ ছাড়া প্রকৃতির প্রায় সব রূপ নিয়ে সবুজের ঘাগরা গায়ে আমাদের দেশ ভিন্ন ঋতুতে ভিন্ন সাজে সেজে ওঠে। শীতের ছুটির মৌসুমে ঘরের উষ্ণতা ছেড়ে পরিবার-বন্ধুদের নিয়ে দেশের পর্যটনকেন্দ্র ঘুরে দেখার আনন্দই আলাদা।
কক্সবাজার: পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার শীতকালে ভ্রমণের জন্য আদর্শ। সামুদ্রিক আবহাওয়ার জন্য ঠান্ডার প্রকোপ কম। মেরিন ড্রাইভ, লাবনী ও সুগন্ধা সমুদ্র সৈকত, টেকনাফ, হিমছড়ি, ইনানি, পাটুয়ারটেক, শামলাপুর, সাবরাং – সবই আকর্ষণীয়।
সেন্টমার্টিন: বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। শুধু শীতকালেই সাগর পাড়ি দিয়ে এই দ্বীপে যাওয়া সম্ভব। নীল জলরাশি, প্রবাল পাথর, নারিকেল গাছের সারি – সব মিলিয়ে এক অপরূপ দৃশ্য। জেলেপাড়া, শুটকিপাড়া ঘুরে দেখা যায়।
সুন্দরবন: ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন। রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রা হরিণ, কুমির, বানর সহ নানা প্রাণী। ৩৩০ প্রজাতির গাছ, কটকা, কচিখালী, হিরনপয়েন্ট, কোকিলমণি, দুবলার চর, পুটনি দ্বীপ ও মান্দার বাড়িয়া – দর্শনীয় জায়গা।
সাজেক ভ্যালি: রাঙ্গামাটির ছাদ খ্যাত সাজেক ভ্যালি, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৮০০ ফুট উচ্চতায়। পাহাড়, মেঘের ভ্যালি, প্রকৃতির তিন রকম রূপ একই দিনে উপভোগ করা যায়।
কুয়াকাটা: একই স্থান থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায়। শুটকি পল্লী, ফাতরার বন, গঙ্গামতির জংগল ও লাল কাঁকড়ার দ্বীপ আকর্ষণীয়।
শ্রীমঙ্গল: চা বাগানের বাংলো, বাইক্কা বিলের পাখির অভয়াশ্রম, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান – প্রকৃতির কোলে এক অনন্য অভিজ্ঞতা।
বান্দরবান: মেঘ ছোঁয়া পাহাড়, সাঙ্গু নদীর পাশ, আদিবাসী বোমাং রাজার বাড়ি, স্বর্ণ মন্দির, নীলাচল, নীলগিরি, মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্স, চিম্বুক পাহাড়, শৈল প্রপাত – সবই অনন্য।
রাঙ্গামাটি: উপজাতীয় জাদুঘর, চাকমা রাজার বাড়ি, রাজবন বিহার, ঝুলন্ত সেতু, কাপ্তাই লেক, শুভলং ঝর্ণা – আকর্ষণীয় স্থান।
বাগেরহাট: ষাট গম্বুজ মসজিদ, নয় গম্বুজ মসজিদ – ঐতিহাসিক স্থাপত্যের নিদর্শন।
সোনাদিয়া দ্বীপ: ক্যাম্পিং এর জন্য আদর্শ। সমুদ্র সৈকত, জীব বৈচিত্র্যপূর্ণ জলাবন, প্যারাবন, বিচিত্র পাখি।
অন্যান্য: মনপুরা দ্বীপ, নিঝুম দ্বীপ, টাঙ্গুয়ার হাওর, অষ্টগ্রাম ও মিঠামইন হাওর, হাকালুকি হাওর, মৌলভীবাজার ও গাজীপুরের ইকো রিসোর্ট।
শীতকালীন ভ্রমণের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য: উপযুক্ত পোশাক, ত্বকের যত্ন, আবহাওয়ার পূর্বাভাস, যানবাহন ও হোটেলের আগে থেকে বুকিং, প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র।