ট্রেন ভ্রমণ

আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ৫:১২ পিএম

ট্রেন ভ্রমণ: অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ

বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় ট্রেনের গুরুত্ব অপরিসীম। ব্রিটিশ আমলে রেলপথ নির্মাণের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মধ্যে যোগাযোগের দ্রুত মাধ্যম হিসেবে ট্রেনের ভূমিকা ছিল অতুলনীয়। স্বাধীনতার পরও রেলপথই ছিল দীর্ঘ দূরত্ব ভ্রমণের প্রধান মাধ্যম। সম্প্রতি সড়ক পথের উন্নয়নের ফলে ট্রেনের উপর চাপ কিছুটা কমলেও, নিরাপদ ও সুষ্ঠু যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে রেলের জনপ্রিয়তা অব্যাহত রয়েছে।

একটি ট্রেন ভ্রমণের স্মৃতি

আমার জীবনে একটি দীর্ঘ ট্রেন ভ্রমণের স্মৃতি আজও মনে পড়লে আমাকে আনন্দ দেয়। গ্রীষ্মের ছুটিতে আমি রাজশাহী থেকে খুলনায় আমার মেজ ফুফুর বাড়িতে যাওয়ার জন্য ট্রেনে ভ্রমণ করি। মায়ের অনিচ্ছা সত্ত্বেও ছোট মামা আমাকে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট কেটে নিয়ে সকাল ৬:৪৫ মিনিটে আমরা রওনা দিই।

রাজশাহী রেল স্টেশন

রাজশাহী স্টেশনটি সম্প্রতি নবায়ন করা হয়েছে। ট্রান্সপারেন্ট গ্লাসের ছাদ, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা এবং বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা আমাকে মুগ্ধ করেছিল। দশটি প্ল্যাটফর্মের মধ্যে ছয়টিতে নিয়মিত ট্রেন চলাচল করে। কিন্তু কিছু যাত্রী খাবারের ঠোঙা এদিক ওদিক ছুড়ে ফেলার দৃশ্য আমার মনে দুঃখের সঞ্চার করে।

ভ্রমণ পথে

আব্দুলপুর জংশন, পাবনা বাইপাস, ঈশ্বরদী জংশন, কুষ্টিয়া এবং যশোর স্টেশন - এই স্টেশনগুলোতে ট্রেনের যাত্রাকালে নেমে আমি নতুন নতুন স্থান দেখতে পাই। ঈশ্বরদী জংশনের ঐতিহাসিক গুরুত্ব সম্পর্কে মামার বর্ণনা শুনে আমি মুগ্ধ হই। মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনটি দেখে আমার আনন্দ দ্বিগুণ হয়ে যায়। কুষ্টিয়া স্টেশনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি, যশোর স্টেশনে মাইকেল মধুসূদন দত্তের কবিতা স্মরণ করে আমি আবেগান্বিত হই।

মানুষের মুখের ভাষা

আমার যাত্রাকালীন চোখে পড়ে অঞ্চলভেদে মানুষের মুখের ভাষার পার্থক্য। অঞ্চল পরিবর্তনের সাথে সাথে কী দ্রুত মানুষের মুখের ভাষা পরিবর্তিত হয়ে যায়, তা ভেবে আমি বিস্মিত হই।

ট্রেনের ভেতরের দৃশ্য

ট্রেনে বিভিন্ন ধরনের মানুষ ছিল। টিকিট পরীক্ষকদের কাজ দেখে আমি অনেক কিছু শিখি। একটা লােকের সুন্দর গলায় লালন গীতি গাওয়া আমাকে মুগ্ধ করে। প্রায় ৭ ঘণ্টার যাত্রা শেষে আমরা খুলনা স্টেশনে পৌঁছাই।

খুলনা থেকে রাজশাহী

খুলনায় ফুফা ও অনীক আমাদের অভ্যর্থনা জানায়। অনীকের সাথে আমার বন্ধুত্ব হয়। খুলনা থেকে বিকেল ৩টায় ট্রেনে উঠে আমরা রাজশাহী ফিরে আসি। রাতের ট্রেন ভ্রমণ একটু ভীতিকর মনে হলেও আনন্দময় ছিল। রাত সাড়ে ১০টায় রাজশাহী স্টেশনে পৌঁছে বাবাকে দেখে আমার আনন্দে আরও বৃদ্ধি পায়।

শেষ কথা

আমার জীবনের অনেক আনন্দের মুহূর্ত এসেছে, কিন্তু সেবারের ট্রেন ভ্রমণটি আমার কাছে সবচেয়ে স্মরণীয়। আজও আমি সেই ভ্রমণের স্মৃতি রোমন্থন করি।

মূল তথ্যাবলী:

  • ব্রিটিশ আমলে রেলপথ নির্মাণের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মধ্যে যোগাযোগের দ্রুত মাধ্যম হিসেবে ট্রেনের ভূমিকা ছিল অতুলনীয়।
  • স্বাধীনতার পরও রেলপথই ছিল দীর্ঘ দূরত্ব ভ্রমণের প্রধান মাধ্যম।
  • নিরাপদ ও সুষ্ঠু যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে রেলের জনপ্রিয়তা অব্যাহত রয়েছে।
  • রাজশাহী রেল স্টেশনটি সম্প্রতি নবায়ন করা হয়েছে।
  • ঈশ্বরদী জংশনের ঐতিহাসিক গুরুত্ব।
  • অঞ্চলভেদে মানুষের মুখের ভাষার পার্থক্য।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - ট্রেন ভ্রমণ

৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

ট্রেনের নিচে ঝুলে ভ্রমণ করেছেন।

২৮ ডিসেম্বর ২০২৪

নোরা ফাতেহি ট্রেনে ভ্রমণ করে তার দলের এক সদস্যের বিয়েতে যোগদান করেছেন।