বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল: একটি বিস্তারিত বিবরণ
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (International Crimes Tribunal, ICT)। এটি আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে গঠিত একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল, যা যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং শান্তির বিরুদ্ধে অপরাধের বিচার করে। এই ট্রাইব্যুনালের গঠন ও কার্যক্রম বিতর্কিত হলেও, এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
ট্রাইব্যুনালের প্রতিষ্ঠা: ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রতিশ্রুতি দেয়। ২০০৯ সালের ২৯শে জানুয়ারী জাতীয় সংসদে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রস্তাব পেশ করা হয় এবং তা সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। অবশেষে, ২০১০ সালের ২৫শে মার্চ ট্রাইব্যুনাল, আইনজীবী প্যানেল এবং তদন্ত সংস্থা গঠন করা হয়। প্রথম ট্রাইব্যুনাল (ICT-1) গঠিত হয় বিচারপতি মো. নিজামুল হকের নেতৃত্বে। পরবর্তীতে, বিচার প্রক্রিয়া আরও গতিশীল করার জন্য ২০১২ সালের ২২শে মার্চ দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল (ICT-2) গঠন করা হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ: ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিচারপতি মো. নিজামুল হক, বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীর, বিচারপতি আনোয়ারুল হক, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, বিচারপতি মোঃ মজিবুর রহমান মিয়া, বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি মোহাম্মদ শাহিনুর ইসলাম এবং বিচারপতি মোঃ সোহরাওয়ার্দী। চিফ প্রসিকিউটর ছিলেন গোলাম আরিফ। উল্লেখযোগ্য অভিযুক্তদের মধ্যে আব্দুল কাদের মোল্লা, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী, মতিউর রহমান নিজামী, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, গোলাম আযম, আবুল কালাম আজাদ।
গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা: আব্দুল কাদের মোল্লার বিচার এবং তার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর শাহবাগ চত্বরে গণজাগরণ মঞ্চের উত্থান, এবং এর প্রেক্ষিতে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম নিয়ে জাতিসংঘ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার সমালোচনাও উল্লেখযোগ্য। ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের পদত্যাগ এবং বিভিন্ন তথ্য ফাঁসের ঘটনাও উল্লেখযোগ্য।
আইনের সংশোধন: ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন ২০০৯ ও ২০১৩ সালে সংশোধিত হয়। সম্প্রতি ২০২৪ সালে আরেকটি সংশোধনী প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয় যা ডিজিটাল প্রমাণ গ্রহণ, বিদেশী আইনজীবীর অংশগ্রহণ ইত্যাদি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে।
স্থান: ঢাকা (পুরাতন হাইকোর্ট ভবন), শাহবাগ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, ইত্যাদি।
উল্লেখ্য: এই প্রবন্ধে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য উপস্থাপন করা হয় নি। আরও তথ্য উপলব্ধ হলে এই প্রবন্ধ পরিবর্ধিত হবে।