হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ: একটি বিশ্লেষণ
২০১০ সালের ১৯ জানুয়ারি চট্টগ্রামের প্রায় একশত কওমি মাদ্রাসার শিক্ষকদের নিয়ে গঠিত হয় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক শাহ আহমদ শফী ছিলেন এর প্রতিষ্ঠাতা। এই সংগঠনটির প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশে ইসলামী শাসনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। তবে, বছরের পর বছর ধরে এর কর্মকাণ্ড নিয়ে বিতর্ক ও সমালোচনা অব্যাহত রয়েছে।
২০১১ সালে নারী উন্নয়ন নীতির বিরোধিতা করে হেফাজতে ইসলাম। তারা ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষানীতির বিরোধিতা এবং ইসলাম ও রাসুলকে কটূক্তিকারী বলে অভিযুক্ত নাস্তিক ব্লগারদের ফাঁসির দাবিতে ব্যাপক আন্দোলন করে। ২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকায় তাদের লং মার্চ এবং বিক্ষোভ ব্যাপক হিংসাত্মক ঘটনায় পরিণত হয়। মতিঝিল, পল্টন, জিরো পয়েন্ট, গুলিস্তানসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় বহু মানুষ নিহত ও আহত হয়, এবং প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়।
২০২০ সালে শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুর পর জুনায়েদ বাবুনগরী এবং পরবর্তীতে মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী এই সংগঠনের আমীর হন। হেফাজতে ইসলামের নীতি ও কর্মকাণ্ড নিয়ে বিভিন্ন সময়ে ব্যাপক সমালোচনা ও প্রশ্ন উঠেছে। তাদের নারী নীতি বাতিলের দাবির বিরুদ্ধে নারীরাও প্রতিবাদ করেছে। এই সংগঠনটির বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাথে সম্পর্ক এবং আর্থিক সহায়তা গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। তবে হেফাজতে ইসলাম এসব অভিযোগ অস্বীকার করে।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের রাজনীতি ও সমাজে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে। তাদের কর্মকাণ্ড ও বক্তব্যের প্রভাব রয়েছে ধর্ম, রাজনীতি, সামাজিক মূল্যবোধ এবং মানবাধিকারের উপর। তাদের ভবিষ্যৎ কর্মকাণ্ড ও প্রভাব পর্যবেক্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ।