জাতিসংঘের ছয়টি প্রধান অঙ্গের অন্যতম জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ (ইংরেজি: United Nations Security Council (UNSC)) বা নিরাপত্তা পরিষদ আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্বে নিয়োজিত। এর ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে শান্তিরক্ষা অভিযান পরিচালনা, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ, এবং সামরিক অভিযানের অনুমোদন। পরিষদের রেজুলেশন সদস্য রাষ্ট্রগুলির জন্য বাধ্যতামূলক। প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয় ১৭ জানুয়ারি ১৯৪৬ সালে।
পরিষদে মোট ১৫ জন সদস্য রয়েছে, যার মধ্যে ৫ জন স্থায়ী সদস্য (চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র) এবং ১০ জন অস্থায়ী সদস্য। স্থায়ী সদস্যদের ভেটো ক্ষমতা রয়েছে, অর্থাৎ তারা যেকোনো রেজুলেশন বাতিল করতে পারে। অস্থায়ী সদস্যরা ২ বছর মেয়াদে নির্বাচিত হয়।
১৯৪৪ সালের ডাম্বার্টন ওকস সম্মেলনে জাতিসংঘের কাঠামো নির্ধারণের সময় স্থায়ী সদস্যদের নির্বাচন করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র ব্রাজিলকে ষষ্ঠ স্থায়ী সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু রাশিয়া ও যুক্তরাজ্যের বিরোধিতার কারণে তা সম্ভব হয়নি। স্থায়ী সদস্যদের ভেটো ক্ষমতা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক হয়েছিল, যা ১৯৪৫ সালের ইয়াল্টা সম্মেলনে চূড়ান্তভাবে নির্ধারিত হয়। ১৯৪৫ সালের সান ফ্রান্সিসকো সম্মেলনে জাতিসংঘের সনদের খসড়া তৈরি হয়।
জাতিসংঘের সনদ পরিষদের কাজ ব্যাখ্যা করে, যার মধ্যে আন্তর্জাতিক শান্তির হুমকির তদন্ত, বিবাদের শান্তিপূর্ণ সমাধানের সুপারিশ, অর্থনৈতিক ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করা, এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা অন্তর্ভুক্ত। পরিষদ নতুন মহাসচিব ও সদস্য রাষ্ট্রের নিয়োগের সুপারিশ করে।
বর্তমানে নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারের প্রস্তাব রয়েছে, যার মধ্যে স্থায়ী সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ভারত, ব্রাজিল, জার্মানি ও জাপান স্থায়ী সদস্যপদের জন্য দাবি করে আসছে। তবে নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার নিয়ে ঐকমত্য তৈরি করা কঠিন হচ্ছে।