কফি আততা আনান: একজন বিশিষ্ট কূটনীতিক ও জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব
বিশ্বের ইতিহাসে কফি আনানের নাম স্মরণীয় হয়ে থাকবে একজন অসাধারণ কূটনীতিক ও জাতিসংঘের ৭ম মহাসচিব হিসেবে। ১৯৩৮ সালের ৮ই এপ্রিল ঘানার কুমাসি শহরে জন্মগ্রহণকারী আনান ১৯৯৭ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত দুই মেয়াদে জাতিসংঘের মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেন। তিনিই প্রথম জাতিসংঘের নিজস্ব কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে মহাসচিব নির্বাচিত হন। জাতিসংঘের আমলাতন্ত্র সংস্কার, এইচআইভি প্রতিরোধে কাজ, বিশেষ করে আফ্রিকায়, এবং জাতিসংঘ বৈশ্বিক চুক্তি সম্পাদন তার উল্লেখযোগ্য অবদানের মধ্যে অন্যতম। ২০০১ সালে জাতিসংঘ ও কফি আনান যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরষ্কার লাভ করেন।
তিনি কফি আনান ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং নেলসন ম্যান্ডেলা প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সংগঠন দ্য এল্ডারসের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য অবদানের মধ্যে রয়েছে সিরিয়া সংকটে জাতিসংঘ-আরব লীগের যৌথ বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করা এবং মায়ানমারের রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট তদন্তে গঠিত আনান কমিশনের নেতৃত্ব দেওয়া। ২০১৮ সালের ১৮ই আগস্ট সুইজারল্যান্ডে সামান্য অসুস্থতার পর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
শিক্ষা ও কর্মজীবন:
কুমাসি কলেজ অফ সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে অর্থনীতিতে অধ্যয়ন শুরু করে ম্যাকালেস্টার কলেজ, গ্র্যাজুয়েট ইউনিভার্সিটি জেনেভা এবং এমআইটি থেকে তিনি যথাক্রমে অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং ব্যবস্থাপনা নিয়ে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। ১৯৬২ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জেনেভা কার্যালয়ে কাজ শুরু করে তিনি জাতিসংঘে যোগ দেন। পরবর্তীতে শান্তিরক্ষা বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালনসহ জাতিসংঘ সচিবালয়ের বিভিন্ন পদে কাজ করেন।
ব্যক্তিগত জীবন:
কফি আনানের যমজ বোন ছিলেন ইফুয়া আততা। আকান সংস্কৃতিতে অনেক ছেলেমেয়ের নাম সপ্তাহের যে দিনে জন্মগ্রহণ করে সেদিন অনুযায়ী রাখা হয়। কফি নামটি শুক্রবারের সাথে সম্পর্কিত। আনান বলেছিলেন তার উপাধি ‘ক্যানন’ শব্দের সাথে ছন্দমিল করে। তিনি ১৯৬৫ সালে তিতি আলাকিজাকে এবং ১৯৮৪ সালে নেন লাগেরগ্রেনকে বিয়ে করেন।