গাজা: ফিলিস্তিনের একটি ঐতিহাসিক শহর
গাজা, ফিলিস্তিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর, যা গাজা উপত্যকায় অবস্থিত। এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম। প্রায় ৫০০০ বছরের পুরোনো এই শহরটি উত্তর আফ্রিকা ও লেভান্টের মধ্যবর্তী ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলে অবস্থিত, যা অতীতে মশলা বাণিজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল। খ্রিস্টপূর্ব ১৫ম শতাব্দীতে এর জনবসতি স্থাপিত হয় এবং প্রাচীন মিশর, ফিলিস্তিনসহ বিভিন্ন শাসক এবং সাম্রাজ্যের শাসনামলে এর ইতিহাস জুড়ে রয়েছে।
গাজার ভৌগোলিক অবস্থান: গাজা একটি নিচু ও গোলাকার পাহাড়ের উপর অবস্থিত, যার উচ্চতা প্রায় ১৪ মিটার। শহরটির বেশিরভাগ অংশ পাহাড়ের নিচে সমতলে নির্মিত, উত্তর ও পূর্বে শহরতলি বিস্তৃত। পশ্চিমে সমুদ্র সৈকত ও বন্দর অবস্থিত।
জনসংখ্যা ও ধর্ম: বর্তমানে গাজার জনসংখ্যা প্রায় ৫১৫,৫৫৬, যা ফিলিস্তিনের বৃহত্তম শহর। জনসংখ্যার অধিকাংশ মুসলিম, বেশিরভাগ সুন্নি সম্প্রদায়ের অন্তর্গত। তবে এখানে একটি ছোট খ্রিস্টান সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ও বসবাস করে, যার সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৩ হাজার। গাজার ইহুদি সম্প্রদায়ের ৩০০০ বছরের ঐতিহ্য ছিল, তবে ১৯৪৮ সালের পর থেকে এখানে আর কোন ইহুদি বাস করে না।
ঐতিহাসিক তথ্য: ১৫৫৭ সালে ওসমানী খাজনা নথিতে গাজার পুরুষ করদাতার সংখ্যা ছিল ২৪৭৭। ১৫৯৬ সালের তথ্য অনুযায়ী, মুসলিম, খ্রিস্টান ও ইহুদি সম্প্রদায় এখানে বসবাস করত। ওসমানী আমলে গাজা জেরুজালেম ও সাফার পরে তৃতীয় বৃহত্তম শহর ছিল। ১১৮৭ সালে সলাহুদ্দিন আয়ুবী গাজা জয় করেন এবং সুন্নি ইসলামকে প্রচার করেন।
গাজা বর্তমানে: গাজা বর্তমানে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সমস্যা ও রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের মধ্যে রয়েছে, যার ফলে জনগণ অর্থনৈতিক ও মানবিক সঙ্কটের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। গাজা উপত্যকা, একটি অবরোধের মুখে, বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আসছে।