ইসলামিক স্টেট (আইএসআইএস) নামটি শুনলেই অনেকের মনেই উঠে আসে ভয়াবহ সন্ত্রাস, রক্তপাত ও ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র। ২০০৪ সালে ইরাকে আল-কায়েদার একটি শাখা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এই সংগঠনটি। প্রথমে 'তানজিম কাইদাত আল জিহাদ ফি বিলাদ আল রাফিদাইন' নামে পরিচিত হলেও, পরবর্তীতে ইসলামিক স্টেট অব ইরাক (আইএসআই) নামে পরিচিতি পায়। ২০১৩ সালে সিরিয়ায় প্রসার লাভ করে 'ইসলামিক স্টেট অব ইরাক এন্ড দ্য লেভান্ট' (আইএসআইএল) নাম গ্রহণ করে। ২০১৪ সালে 'ইসলামিক স্টেট' (আইএস) নামে খিলাফত ঘোষণা করে।
আইএসআইএস-এর কার্যকলাপ ব্যাপকভাবে সমালোচিত। তাদের কর্মকাণ্ডের মধ্যে রয়েছে বেসামরিক লোকজন হত্যা, শিরচ্ছেদ, পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন ধ্বংস, এবং ব্যাপক সহিংসতা। সাধারণ মানুষের জীবন নিরাপত্তা বিপন্ন করে তোলার জন্য জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ তাদের সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে।
আইএসআইএস-এর প্রসার ছিল ইরাক ও সিরিয়ার সীমার বাইরেও। লিবিয়া, মিশর, উত্তর আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া— বিভিন্ন দেশেই তাদের সক্রিয়তা ছিল। ২০১৪ সালে আবু বকর আল-বাগদাদীকে খলিফা ঘোষণা করা হয় এবং ইরাক ও সিরিয়ার বৃহৎ অংশ দখল করে। তবে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তীব্র বিরোধিতার মুখে তাদের অধিকাংশ এলাকা হারিয়ে যায়। তবে, আফগানিস্তান, পশ্চিম আফ্রিকা ও সাহেল অঞ্চলে তাদের পুনরুত্থানের আশঙ্কা রয়েছে।
আইএসআইএস এর উত্থান ও পতনের ইতিহাস জটিল। এটি মূলত সুন্নি উগ্রবাদীদের একত্রিত করে তৈরি হয়েছিলো। তাদের ধারণা ছিল একটি কঠোর ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠা করা। তাদের কার্যকলাপের জন্য তারা বহুবার আন্তর্জাতিক নিন্দা ও নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হয়েছে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো হয়েছে। আইএসআইএসের অত্যাচারের কারণে ব্যাপক মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এখনও পর্যন্ত তাদের সম্পূর্ণ পরাজয় ঘটেনি এবং বিভিন্ন অঞ্চলে তাদের পুনঃউত্থানের ভয় রয়েছে।