যুক্তরাজ্য: ইতিহাস, ভূগোল, অর্থনীতি ও সংস্কৃতি
গ্রেট ব্রিটেন ও উত্তর আয়ারল্যান্ড যুক্তরাজ্য, যা সাধারণত যুক্তরাজ্য (United Kingdom, UK) বা ব্রিটেন (Britain) নামে পরিচিত, ইউরোপের উত্তর-পশ্চিম উপকূলের কাছে অবস্থিত একটি স্বাধীন দ্বীপরাষ্ট্র। এটি ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ও উত্তর আয়ারল্যান্ড নিয়ে গঠিত। গ্রেট ব্রিটেন দ্বীপ, আয়ারল্যান্ড দ্বীপের উত্তর-পূর্বাংশ এবং বহু ছোট দ্বীপ যুক্তরাজ্যের অন্তর্গত। ২০২২ সালে এর জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৬ কোটি ৭০ লাখ।
ঐতিহাসিক পরিপ্রেক্ষিত:
যুক্তরাজ্যের ইতিহাস জমি অধিগ্রহণ ও রাজ্য একত্রীকরণের এক লম্বা প্রক্রিয়া। ১৭০৭ সালে ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ড একত্রিত হয়ে গ্রেট ব্রিটেন গঠন করে। ১৮০১ সালে আয়ারল্যান্ড যুক্ত হলে গ্রেট ব্রিটেন ও আয়ারল্যান্ড যুক্তরাজ্য গঠিত হয়। ১৯২২ সালে আয়ারল্যান্ডের অধিকাংশ অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, এবং ১৯২৭ সালে বর্তমান নাম গ্রহণ করে।
ব্রিটিশ সাম্রাজ্য:
বিশ্বের প্রথম শিল্পায়িত দেশ হিসেবে যুক্তরাজ্য একসময় বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্র ছিল। ১৯২০-এর দশকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য বিশ্বের প্রায় এক-চতুর্থাংশ ভূখণ্ড ও জনসংখ্যা জুড়ে ছিল। দুটি বিশ্বযুদ্ধের পর ও উপনিবেশীয়দের স্বাধীনতা আন্দোলনের ফলে সাম্রাজ্যের ক্ষয় হতে থাকে। তবে আইনি ও রাজনৈতিক ব্যবস্থায় ব্রিটিশ প্রভাব ও সংস্কৃতির প্রভাব বিশ্বব্যাপী। ইংরেজি ভাষা বিশ্বের সবচেয়ে প্রচলিত ভাষা।
রাজনৈতিক ব্যবস্থা:
যুক্তরাজ্য একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্র ও সংসদীয় গণতন্ত্র। লন্ডন এর রাজধানী ও বৃহত্তম শহর। এডিনবরা, কার্ডিফ ও বেলফাস্ট যথাক্রমে স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের রাজধানী। ১৯৯৮ সাল থেকে স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের নিজস্ব সরকার ও আইনসভা আছে।
অর্থনীতি:
যুক্তরাজ্য বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম অর্থনীতি। এটি একটি পারমাণবিক শক্তি এবং সামরিক ব্যয়ে চতুর্থ স্থানে। যুক্তরাজ্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য এবং কমনওয়েলথ, জি-৭, ন্যাটো ইত্যাদির সদস্য। ১৯৭৩ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য ছিল (ব্রেক্সিট)।
ভৌগোলিক অবস্থান:
যুক্তরাজ্যের আয়তন প্রায় ২,৪৩,৬১০ বর্গকিলোমিটার। নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু বিরাজ করে। গ্রীনিচ রয়্যাল অবজারভেটরি মূল মধ্যরেখার মান বিন্দু হিসেবে নির্ধারিত।
জনসংখ্যা:
২০১১ সালের জনগণনার তথ্য অনুযায়ী যুক্তরাজ্যের জনসংখ্যা ৬,৩১,৮১,৭৭৫। ইংরেজি প্রধান ভাষা।
সংস্কৃতি:
যুক্তরাজ্যের সংস্কৃতি সমৃদ্ধ, বিশেষ করে সাহিত্য, সঙ্গীত ও ক্রীড়ায়। ফুটবল, ক্রিকেট, টেনিস জনপ্রিয় ক্রীড়া।
উপসংহার:
যুক্তরাজ্য ইতিহাস, সংস্কৃতি ও অর্থনীতির দিক থেকে বিশ্বের এক গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র। এর ভূমিকা বিশ্ব রাজনীতিতে উল্লেখযোগ্য।