যাত্রী ভোগান্তি: ঢাকার বাস যাত্রা ও বেনাপোল বাস বন্ধের দুর্ভোগ
বাংলাদেশের যাত্রীরা নিত্যদিনই বিভিন্ন ধরণের পরিবহন ব্যবস্থার সমস্যার সম্মুখীন হয়। এই লেখাটিতে আমরা দুটি ভিন্ন ঘটনার আলোচনা করবো যেখানে যাত্রীদের চরম ভোগান্তির কথা উঠে এসেছে। প্রথমটি ঢাকার বাস যাত্রা সংক্রান্ত এবং দ্বিতীয়টি যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে দূরপাল্লার বাস বন্ধের ফলে সৃষ্ট দুর্ভোগের ঘটনা।
ঢাকার বাস যাত্রার ভোগান্তি:
রাজধানী ঢাকার বাস যাত্রা কতটা ভোগান্তিময়, তা বলা বাহুল্য। একাধিক বাস একই রুটে চলাচলের ফলে রাস্তার মোড়ে মোড়ে পীড়াপীড়ি, হাঁকডাক দিয়ে যাত্রী তোলার প্রতিযোগিতা, সামনের স্টপেজে যাত্রী তুলতে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো- এসবই নিত্যদিনের ঘটনা। নারী, শিশু ও বয়স্কদের বাসে উঠতে রীতিমত যুদ্ধ করতে হয়। বাস মালিকরা বলছেন, এ ব্যবসা এখন চালক-কন্ডাক্টরদের হাতে দৈনিক জমার ভিত্তিতে চলে, ফলে আয় বাড়াতে তারা বেপরোয়া প্রতিযোগিতায় নামে। এতে দুর্ঘটনার পাশাপাশি যানজটও বেড়ে যাচ্ছে।
কিছু কিছু জায়গায় লাইনে দাঁড়িয়ে বাসে ওঠার রীতি গড়ে উঠলেও, অনেক যাত্রী অ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে শৃঙ্খলাবদ্ধ বাস পরিষেবা চালুর দাবি করছেন, যেমনটি অনেক উন্নত দেশে দেখা যায়। তিন বছর আগে চালু হওয়া 'ঢাকা নগর পরিবহন' এই বিশৃঙ্খলা দূর করার উদ্যোগ নিলেও তেমন সাফল্য পায়নি।
বেনাপোল বাস বন্ধের দুর্ভোগ:
২২ নভেম্বর ২০২৪ থেকে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে দূরপাল্লার সব বাস চলাচল বন্ধ ছিল। যাত্রীদের চেকপোস্টে না নামিয়ে গভীর রাতে কাগজপুকুর পৌর বাস টার্মিনালে নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগে এই বাস বন্ধের ঘটনা ঘটে। পৌর বাস টার্মিনালে যাত্রীদের নিরাপত্তা ও সুবিধার দিক বিবেচনায় না করে এই পদক্ষেপ নেওয়া হলে যাত্রীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পাঁচ দিন টানা বাস বন্ধ থাকার ফলে হাজার হাজার যাত্রী চরম দুর্ভোগের সম্মুখীন হয়, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও ট্রেন ভাড়া করে গন্তব্যে পৌঁছাতে বাধ্য হয়। বেনাপোল পরিবহন ম্যানেজার সমিতি ও যশোর জেলা বাস মালিক সমিতি প্রশাসনের সাথে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের দাবি জানায়।
উপসংহার:
ঢাকার বাস যাত্রার বিশৃঙ্খলা ও বেনাপোল বাস বন্ধের ফলে যাত্রীদের ভোগান্তি উদ্বেগজনক। প্রযুক্তি ব্যবহার, যানবাহন ব্যবস্থাপনায় উন্নত ব্যবস্থা ও সরকারের দ্রুততর পদক্ষেপের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা অত্যন্ত জরুরি।