মিরপুর: ঢাকার একটি ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ থানা
ঢাকা মহানগরীর উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত মিরপুর, একটি ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। এর উত্তরে শাহ আলী ও পল্লবী থানা, দক্ষিণে শেরেবাংলা নগর ও দারুস সালাম থানা, পূর্বে কাফরুল ও পল্লবীর একাংশ এবং পশ্চিমে শাহ আলী, দারুস সালাম থানা ও সাভার উপজেলা অবস্থিত। প্রায় ৫৮.৬৬ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত মিরপুরে কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, সেনপাড়া, শিয়ালবাড়ী, এবং ১ থেকে ১৪ নম্বর সেকশনসহ পল্লবী এলাকা অন্তর্ভুক্ত।
নামকরণের ইতিহাস:
ধারণা করা হয়, মোগল আমলে “মীর” উপাধিধারী কোনো ব্যক্তির ভূসম্পত্তির নামানুসারে এলাকার নামকরণ হয় ‘মিরপুর’। ‘কাজীপাড়া’, ‘শেওড়াপাড়া’, ‘সেনপাড়া’ প্রভৃতি এলাকার নামকরণও ঐতিহাসিক ঘটনা ও ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্যের সাথে জড়িত। ‘কোটবাড়ি’ নামক স্থানের অবস্থান তুরাগ নদীর তীরে সুলতানী-পূর্ব যুগের দুর্গের সাক্ষ্য বহন করে। ‘পাইকপাড়া’ সৈন্যদের বসতিস্থলের ইঙ্গিত দেয়, যদিও এর সঠিক সময়কাল নির্ণয় কঠিন। মিরপুরের ভূমিরূপ প্লাইস্টোসিন যুগের উঁচুভূমি ও সমতল ভূমির মিশ্রণ, যা মানুষের প্রাচীন বসতির সাক্ষ্য দেয়।
গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও ঘটনা:
মিরপুরে শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম, গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়, বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা, জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান, শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ, এবং বেশকিছু ঐতিহাসিক স্থাপনা অবস্থিত। ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আয়োজন শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে মিরপুরের গুরুত্ব আরও প্রতিষ্ঠিত করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় মিরপুর ৩১ জানুয়ারি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী থেকে মুক্ত হয়।
জনসংখ্যা ও অর্থনীতি:
মিরপুরের জনসংখ্যা অনেক বেশি। এখানকার অর্থনীতি গার্মেন্টস, টেক্সটাইলসহ বিভিন্ন শিল্প ও ব্যবসায় নির্ভরশীল। এছাড়াও, কৃষিকাজ এবং সেবা খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
উপসংহার:
মিরপুর ঢাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যার ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং বর্তমান উন্নয়নের সাথে জড়িত। এর ঐতিহাসিক স্থাপনা, সাংস্কৃতিক মূল্য, এবং অর্থনৈতিক গুরুত্ব মিরপুরকে ঢাকা শহরের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।