মদ্যপান বা এলকোহলযুক্ত পানীয়ের ব্যবহার একটি জটিল বিষয় যা সামাজিক, স্বাস্থ্য ও আইনগত দিকগুলোকে জড়িত করে। বিভিন্ন ধরণের মদ্যপানের পানীয় রয়েছে, যেমন ওয়াইন, বিয়ার, হুইস্কি, রাম, ভদকা ইত্যাদি। এই পানীয়গুলিতে ইথাইল অ্যালকোহল থাকে যা সামান্য পরিমাণে গ্রহণ করলে উৎফুল্লতা আনে, তবে অতিরিক্ত সেবনে নেশা, মোহ, এবং জ্ঞান হারানোর ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। দীর্ঘদিন ধরে মদ্যপান করলে শারীরিক নির্ভরতা, আসক্তি এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার সৃষ্টি হয়।
বিভিন্ন সংস্কৃতিতে মদ্যপানের একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ভূমিকা রয়েছে। অনেক দেশে মদ উৎপাদন, বিক্রয় এবং সেবন নিয়ন্ত্রণকারী আইন রয়েছে। ইসলাম ধর্মে মদ্যপান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তবে, বিশ্বের অনেক দেশেই মদ্যপান নির্দিষ্ট মাত্রায় আইনসিদ্ধ। ২০১৪ সালে বিশ্বে মদ্য উৎপাদন ব্যবসায় ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি অর্থ লেনদেন হয়েছিল।
ওয়াইন সাধারণত গাঁজনকৃত আঙুরের রস থেকে তৈরি হয়, যদিও কিছু ক্ষেত্রে আপেল, জাম ইত্যাদি ফলের গাঁজনেও ওয়াইন প্রস্তুত করা হয়। বিয়ার গম, ভুট্টা, বার্লি, এবং ধানের গাঁজনে তৈরি হয় এবং এটি সম্ভবত পৃথিবীর সবচেয়ে পুরানো পানীয়।
২০১৬ সালের তথ্য অনুসারে, বিশ্বে প্রায় ৩৯% পুরুষ এবং ২৫% নারী মদ্যপান করেন। গবেষকরা বলেন, ১৫-৪৯ বছর বয়সীদের মধ্যে প্রতি ১০টি মৃত্যুর মধ্যে ১টি মদ্যপানের কারণে ঘটে। মদ্যপান লিভার সিরোসিস, ক্যান্সার, সড়ক দুর্ঘটনা, এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।
বাংলাদেশে অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা, ২০২২ অনুযায়ী, ২১ বছরের নীচে কেউ মদ্যপানের পারমিট পাবেন না। মদ্যপান, কেনাবেচা, পরিবহন, আমদানি-রপ্তানি সব ক্ষেত্রেই লাইসেন্স, পারমিট এবং পাস প্রয়োজন। বাংলাদেশে মদ্যপান নিয়ে কঠোর আইন থাকলেও, ভেজাল মদ এবং অবৈধ মদ্যপানের ঘটনা মাঝে মধ্যে ঘটে। সরকার মদ্যপান নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করছে। এছাড়াও মদ্যপানের স্বাস্থ্যগত ক্ষতি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।