বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ): বরেন্দ্র অঞ্চলের পুনরুজ্জীবন
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের বরেন্দ্র অঞ্চল, এর লাল কংকরময় মাটি, রুক্ষ প্রকৃতি ও ঐতিহাসিক গুরুত্বের জন্য পরিচিত। একসময় অত্যন্ত উর্বর এই অঞ্চল কালক্রমে মরুকরণের শিকার হয়। কৃষিক্ষেত্রের অবক্ষয়, পানি সংকট এবং দারিদ্র্য এই অঞ্চলের মানুষের জীবনে ছায়া নেমে আসে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য ১৯৯২ সালের ১৫ জানুয়ারী কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে 'বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ' (বিএমডিএ) নামে একটি প্রতিষ্ঠান গঠিত হয়। রাজশাহী, নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ২৫টি উপজেলাকে অন্তর্ভুক্ত করে বিএমডিএ তার যাত্রা শুরু করে।
বিএমডিএ'র প্রধান লক্ষ্য ছিল বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন, পানি ব্যবস্থাপনা, যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করা এবং এ অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নত করা। বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচীর মাধ্যমে বিএমডিএ নতুন ধরণের নলকূপ স্থাপন, পুকুর-খাল খনন, বৃক্ষরোপণ, ফিডার রোড নির্মাণ এবং উৎপাদিত ফসলের বাজারজাতকরণে সহায়তা করেছে। এই প্রচেষ্টার ফলে বরেন্দ্র অঞ্চলে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে, জনগোষ্ঠীর আয় বেড়েছে এবং দারিদ্র্যের হার কমেছে।
বিএমডিএ'র সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ২০০৩ সালে 'উত্তর বাংলাদেশ গভীর নলকূপ প্রকল্প' এর অধীনে ১২১৭টি অকেজো নলকূপ গ্রহণ ও মেরামত করে ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর ও পঞ্চগড় জেলায় এর কার্যক্রম সম্প্রসারিত হয়। পরবর্তীতে ২০০৪ সাল থেকে বিএডিসি'র অচল নলকূপ গ্রহণ করে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের সকল জেলায় বিএমডিএ'র কার্যক্রম বিস্তৃত হয়।
বর্তমানে বিএমডিএ বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকদের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আধুনিক কৃষি পদ্ধতি, নতুন নতুন জাতের বীজ, সেচ ব্যবস্থা ও বাজারজাতকরণে সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে তারা কৃষকদের জীবিকা উন্নত করার চেষ্টা করছে। তবে, অনেক চ্যালেঞ্জ এখনও বিদ্যমান। যেমন- পানি সংকট, মাটির উর্বরা শক্তি, অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা ইত্যাদি। এইসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য বিএমডিএ বিভিন্ন পরিকল্পনা ও কর্মসূচি গ্রহণ করে এগিয়ে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, প্রাপ্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করে এ লেখাটি লিখিত হয়েছে। ভবিষ্যতে আরো তথ্য প্রাপ্ত হলে এই লেখাটি আপডেট করা হবে।