বাংলাদেশের ইতিহাসে বহুবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হয়েছে, বন্যা তার মধ্যে অন্যতম। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে উল্লেখযোগ্য বন্যার উদ্ধারকার্যের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হলো। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের পূর্ব সীমান্তবর্তী ১২টি জেলায় নজিরবিহীন বন্যা দেখা দেয়। এই বন্যায় প্রায় ১৫ জন প্রাণ হারায় এবং কয়েক লক্ষ মানুষ পানিবন্দী হয়। বন্যার ফলে বহু ঘরবাড়ি, মাছের খামার, গাছপালা ও শস্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ অনেক সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
উদ্ধারকার্যে সরকার, সেনাবাহিনী, বিজিবি, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন সংস্থা সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও সাধারণ মানুষও উদ্ধার ও ত্রাণ কাজে অংশগ্রহণ করে। অনেক এলাকায় নৌকাযোগে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হলেও প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে সকল স্থানে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।
বন্যার কারণ নিয়ে বিভিন্ন মতামত ও সমালোচনা দেখা যায়। কেউ আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস ব্যর্থতাকে দায়ী করেন, আবার কেউ যৌথ নদী কমিশনের নিষ্ক্রিয়তার দোষারোপ করেন। তবে উদ্ধারকার্য এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সাময়িক সমস্যার চেয়ে দ্রুত উদ্ধার ও পুনর্বাসনই প্রধান কাজ।
বন্যাপরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ ও পুনর্বাসনের দিকে সরকারের মনোযোগ প্রয়োজন। এই দুর্যোগ মোকাবেলায় সমন্বয় ও সকলের সহযোগিতা অপরিহার্য। আকস্মিক বন্যার কারণে অনেক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে কাপড়চোপড় ছাড়াই আশ্রয় নিয়েছে। তাদের খাবার ও কাপড়ের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি বিদ্যুৎ সংযোগ পুনঃস্থাপন জরুরি। ত্রাণ বিতরণে সমতা বজায় রাখাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আরেকটি উল্লেখযোগ্য উদ্ধারকার্য ছিল ২০১৮ সালের কেরালার ভূমিধ্বস। ওয়েনাড়ে তিনটি গ্রাম ধ্বংস হয়ে যায় এবং বহু মানুষ ঘরবাড়ি হারায়। ভারতীয় বায়ুসেনা, এনডিআরএফ ও এসডিআরএফ উদ্ধারকার্যে অংশগ্রহণ করে। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ত্রাণ চেয়ে কেরল সরকার দরবার করলেও, কেন্দ্র কেরল সরকারকে উদ্ধার কার্যক্রমের ব্যয়ের জন্য বিপুল অঙ্কের বিল পাঠিয়েছিলো। কেরল হাইকোর্ট মানবিকতার খাতিরে 120 কোটি টাকা মকুব করার নির্দেশ দেয়।