বন্যা

বন্যা: বাংলাদেশের একটি ভয়াবহ বাস্তবতা

বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ। গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা – এই তিন মহানদীর ব-দ্বীপে অবস্থিত হওয়ায় বন্যা এ দেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে বন্যার কবলে পড়ে অসংখ্য মানুষ, ক্ষতিগ্রস্ত হয় অনেক জমি ও সম্পদ। ১৯৮৮ সালের ভয়াবহ বন্যা, যেখানে দেশের প্রায় ৬০% এলাকা পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল, একটি চরম উদাহরণ। সম্প্রতি ২০২২ সালে সিলেটে আঘাত হানা বন্যাও স্মরণীয়। এই বন্যায় সিলেট বিভাগের ৮০% মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে হয়।

বন্যার কারণ:

বন্যার অনেকগুলো কারণ রয়েছে। প্রধান কারণ হলো অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত এবং একইসাথে বড় নদীগুলিতে পানির প্রবাহ বৃদ্ধি। পাহাড়ি ঢল, বাঁধ ভেঙে যাওয়া, সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাস – এগুলোও বন্যায় অবদান রাখে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বন্যার তীব্রতা ও ঘন ঘন হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে বলে ধারণা করা হয়। অন্যদিকে নগরায়ণ, বন উজাড় ও জলাভূমি ধ্বংসের ফলে বন্যার প্রভাব আরও বেড়ে যায়।

বন্যার প্রভাব:

বন্যায় জানমালের অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হয়। মানুষ গৃহহীন হয়, ফসল নষ্ট হয়, রোগ-বালাই ছড়িয়ে পড়ে। অর্থনৈতিক ক্ষতি অতুলনীয়। বন্যা সমগ্র সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবনকে বিঘ্নিত করে।

বন্যা ব্যবস্থাপনা:

বন্যার ক্ষতি কমানোর জন্য বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। বাঁধ নির্মাণ, নদীর খনন, বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ প্রক্রিয়া বৃদ্ধি – এই সব পদক্ষেপ নিলেও বন্যাকে সম্পূর্ণ রুখে দেওয়া সম্ভব হয়নি। সমন্বিত বন্যা ব্যবস্থাপনা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা করার জন্য সরকার ও সমাজের সকল স্তরের সহযোগিতা প্রয়োজন।

মূল তথ্যাবলী:

  • ১৯৮৮ সালের বন্যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল।
  • ২০২২ সালে সিলেটে আঘাত হানা বন্যায় ৮০% মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে ছিল।
  • অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ও নদীগুলিতে পানি বৃদ্ধি বন্যার প্রধান কারণ।
  • বন্যায় জানমালের অপূরণীয় ক্ষতি হয়।
  • বন্যা ব্যবস্থাপনার জন্য সমন্বিত প্রয়াসের আবশ্যকতা রয়েছে।