বাংলাদেশ নৌবাহিনী: স্বাধীনতার অগ্রদূত ও সমুদ্রের অভিভাবক
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্ম হয়। শুধুমাত্র দুটি ছোট গানবোট ‘পদ্মা’ এবং ‘পলাশ’ এবং ৪৯ জন নাবিক নিয়ে যাত্রা শুরু করে নৌবাহিনী। তবুও, ‘অপারেশন জ্যাকপট’-এর মতো সাহসী অভিযানের মাধ্যমে তারা পাকিস্তানি জাহাজ ডুবিয়ে সমুদ্রপথ অবরুদ্ধ করে মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আজ, বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রায় ১ লক্ষ ৩ হাজার বর্গকিলোমিটার সমুদ্রসীমা রক্ষার দায়িত্ব পালন করে। ৮০টিরও বেশি যুদ্ধজাহাজ এবং ঢাকা, চট্টগ্রাম, কাপ্তাই, খুলনা ও মংলায় ৫টি বৃহৎ নৌঘাঁটি নিয়ে এটি কাজ করে। প্রায় ১২০০ অফিসার, ১২,০০০ নাবিক ও ২৫০০ বেসামরিক কর্মকর্তা/কর্মচারী নিয়ে গঠিত এ বাহিনী সমুদ্রসীমা রক্ষার পাশাপাশি চোরাচালান, জলদস্যুতা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায়ও কাজ করে। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনেও বাংলাদেশ নৌবাহিনী নিয়মিত অংশগ্রহণ করে আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় অবদান রাখছে।
নৌবাহিনীর উন্নয়নের লক্ষ্যে বানৌজা ওমর ফারুক ও বানৌজা আলী হায়দার (১৯৭৬ ও ১৯৭৮) এবং বানৌজা আবুবকর (১৯৮২)-এর মতো জাহাজ যুক্ত হয়েছে। আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে নতুন অস্ত্রশস্ত্র, যেমন মিসাইল, টর্পেডো, এবং মাইন সংযোজন করা হয়েছে। বর্তমানে, বানৌজা বঙ্গবন্ধু-র মতো অত্যাধুনিক ফ্রিগেট নৌবাহিনীর শক্তি বৃদ্ধি করছে। নৌবিমান শাখার উন্নয়নও প্রক্রিয়াধীন।
অফিসার ও নাবিকদের প্রশিক্ষণের জন্য বাংলাদেশ নেভাল একাডেমী এবং বানৌজা ঈসা খান, তিতুমীর ও শহীদ মোয়াজ্জেমের মতো প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। বিভিন্ন দেশের সাথে প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা বৃদ্ধি করে বাংলাদেশ নৌবাহিনী আন্তর্জাতিক মানের একটি নৌবাহিনী হিসেবে গড়ে উঠছে।
বাংলাদেশ নৌবাহিনী: স্বাধীনতার রক্ষাকারী, সমুদ্রের সুরক্ষা, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা