সৈয়দ আব্দুস সামাদ: বাংলা ফুটবলের এক অমূল্য সম্পদ
সৈয়দ আব্দুস সামাদ (৬ ডিসেম্বর, ১৮৯৫ - ২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৪) একজন কিংবদন্তি ফুটবল খেলোয়াড়, যিনি বাংলা ফুটবলের ইতিহাসে অম্লান স্মৃতি রেখে গেছেন। "জাদুকর সামাদ" নামে পরিচিত এই ব্যক্তিত্ব ভারতীয় উপমহাদেশের ফুটবল জগতে এক অসাধারণ নৈপুণ্যের অধিকারী ছিলেন।
১৮৯৫ সালে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে জন্মগ্রহণ করেন সামাদ। তবে, কিছু সূত্রে উল্লেখ আছে যে, তিনি বিহারের পূর্ণিয়ায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার ফুটবল জীবনের শুরু কলকাতা এরিয়ান্স ক্লাবের দুঃখীরাম মজুমদারের কাছে। এরিয়ান্স থেকে তিনি রংপুরের তাজ ক্লাবে যান। ১৯১৩ সালে রংপুরের তাজ ক্লাবের হয়ে কলিকাতায় খেলতে গিয়ে ফুটবল সংগঠকদের নজরে পড়েন এবং ১৯১৫ সালে কলিকাতার এরিয়ান্স ক্লাব তাকে দলভুক্ত করে। তার অসাধারণ নৈপুণ্যের কারণে এরিয়ান্স ক্লাব প্রথম বিভাগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে।
১৯২০ সালে ইস্ট বেঙ্গল রেলওয়ে ক্লাবে যোগদানের পর তার ফুটবল জীবন আরও উজ্জ্বল হয়। ১৯২৪ সালে ভারতীয় জাতীয় দলের সদস্য হিসেবে বার্মা, যুক্তরাজ্য এবং চীন সফর করেন। তিনি ড্রিবলিং এবং গোল করার দুর্দান্ত ক্ষমতার জন্য বিখ্যাত ছিলেন। ১৯২৭ সালে ঢাকার ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাব এবং কলকাতার মোহনবাগান ক্লাবের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন। ১৯৩৩ সালে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে যোগদান করে ঐ ক্লাবেই ফুটবল থেকে অবসর নেন। বিভিন্ন সূত্র মতে, তিনি প্রায় ৫০ বছর বয়স পর্যন্ত ফুটবল খেলেছেন।
১৯৫৭ সালে পাকিস্তান জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের বেতনভুক্ত ফুটবল কোচ হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৬২ সালে পাকিস্তান সরকার তাকে রাষ্ট্রপতি পদক প্রদান করে সম্মানিত করেন। ২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৪ সালে পূর্ব পাকিস্তানের সৈয়দপুরে ইন্তেকাল করেন। তার অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন প্রতি বছর ‘যাদুকর সামাদ স্মৃতি যুব ফুটবল টুর্নামেন্ট’ আয়োজন করে। সৈয়দ আব্দুস সামাদ, বাংলা ফুটবলের এক অমূল্য সম্পদ, যার নাম সর্বদাই স্মরণীয় হয়ে থাকবে।