র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব): বাংলাদেশের একটি বিশেষায়িত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী
২০০৪ সালের ২৬শে মার্চ গঠিত র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালনার জন্য প্রতিষ্ঠিত একটি বিশেষায়িত ইউনিট। এটি বাংলাদেশ পুলিশের অধীনে কাজ করে এবং বাংলাদেশ পুলিশ, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, আনসার ও ভিডিপি, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এবং কোস্ট গার্ডের সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত। র্যাবের সদর দপ্তর ঢাকার উত্তরায় অবস্থিত।
র্যাবের গঠন ও কার্যক্রম:
- দি আর্মড পুলিশ অর্ডিন্যান্স ১৯৭৯ (সংশোধনী ২০০৪) অনুসারে গঠিত।
- ১৪ এপ্রিল ২০০৪ সালে কার্যক্রম শুরু।
- সন্ত্রাসবাদ দমন, অপরাধ প্রতিরোধ, জঙ্গিবাদ মোকাবেলা, অপরাধীদের গ্রেফতার, অস্ত্র উদ্ধার প্রভৃতি কাজে নিয়োজিত।
- দেশের বিভিন্ন স্থানে সিপিসি (কোম্পানি) স্থাপন করে কার্যক্রম পরিচালনা করে। উল্লেখযোগ্য কিছু স্থান হলো: ঢাকা (পোড়াবাড়ি, মোহাম্মদপুর, লালবাগ, কোতয়ালী, কামরাঙ্গীরচর, বংশাল, চকবাজার), সাতক্ষীরা, মানিকগঞ্জ, শ্যামনগর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ, চাঁদপুর, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লালমনিরহাট, নীলফামারী, পঞ্চগড়, গাইবান্ধা, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোণা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, পাবনা, টাঙ্গাইল, কক্সবাজার, বান্দরবান।
র্যাবের ভূমিকা ও সমালোচনা:
র্যাব বেশ কয়েকজন হাই-প্রোফাইল সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করতে সফল হলেও, মানবাধিকার সংগঠনের তীব্র সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে। অসংখ্য মৃত্যুর জন্য, বিশেষ করে ক্রসফায়ারে মৃত্যুর জন্য র্যাবকে দায়ী করা হয়। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সহ অনেক সংগঠন র্যাবের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে, যার মধ্যে রয়েছে অপহরণ, নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যা। নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলায় র্যাব-১১ এর কয়েকজন কর্মকর্তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ২০২১ সালে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ র্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি ও ঘটনা:
- লিমন হোসেন (ঝালকাটি ঘটনা): ২০১১ সালে র্যাবের গুলিতে আহত।
- নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলা: র্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তা দোষী সাব্যস্ত।
- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের র্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা।
র্যাবের ভবিষ্যৎ:
র্যাবের ভবিষ্যৎ মানবাধিকারের সাথে সমন্বয়ের উপর নির্ভর করবে। সরকারের পক্ষ থেকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ দূরীকরণ এবং জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।