লালমনিরহাট: রংপুর বিভাগের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত ঐতিহ্য ও সৌন্দর্যের সমন্বয়ে সমৃদ্ধ একটি শহর। এটি লালমনিরহাট জেলার প্রশাসনিক সদর। শহরটির অবস্থান ২৫°৫৪′৪২″ উত্তর ৮৯°২৬′৩″ পূর্ব অক্ষাংশে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর গড় উচ্চতা ৫৩ মিটার। ১৭.৬২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই শহরটি পুরোপুরি পৌরসভা কর্তৃক পরিচালিত। ২০০১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, লালমনিরহাটের জনসংখ্যা ছিল [জনসংখ্যা সংখ্যা যুক্ত করুন], যার মধ্যে পুরুষ [পুরুষের সংখ্যা] ও নারী [নারীর সংখ্যা]। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, লালমনিরহাট শহরের জনসংখ্যা ছিল [জনসংখ্যা সংখ্যা যুক্ত করুন]। নারী-পুরুষ অনুপাত ১০০:১০৪। স্বাক্ষরতার হার ৬৬%। শহরে ১৩৮৯৭ টি পরিবার রয়েছে।
ভৌগোলিক অবস্থান এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য:
লালমনিরহাট জেলা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সীমান্তবর্তী। তিস্তা ও ধরলা নদী এই জেলার প্রধান নদী। এখানে অসংখ্য ছিটমহল রয়েছে, যার মধ্যে দহগ্রাম ও আঙ্গরপোতা উল্লেখযোগ্য। তিন বিঘা করিডোরের মাধ্যমে এই ছিটমহলগুলো মূল ভূখণ্ডের সাথে যুক্ত। জেলার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে তিস্তা নদী এবং এর উপকূলীয় এলাকা। বিরল প্রজাতির ‘নাগ লিঙ্গম’ নামক বৃক্ষও এখানে দেখা যায়।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব:
১৯৮৪ সালে লালমনিরহাট জেলা গঠিত হয়। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে লালমনিরহাট ৬ নং সেক্টরের অধীন ছিল। পাকবাহিনীর নৃশংসতার শিকার হয় এই এলাকা। বেশ কয়েকটি স্থানে বধ্যভূমি ও গণকবরের সন্ধান পাওয়া যায়। লালমনিরহাটের ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলির মধ্যে কুতুব খানা, সিন্দুর মতি, বিভিন্ন জমিদার বাড়ি, মসজিদ, মন্দির উল্লেখযোগ্য।
অর্থনীতি ও জনজীবন:
কৃষি লালমনিরহাটের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। ধান, তামাক, আখ, আলু প্রভৃতি ফসল উৎপাদন হয়। তবে, ব্যবসা, পরিবহন, চাকুরি প্রভৃতিও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। লালমনিরহাটের লোকসংস্কৃতি সমৃদ্ধ। ছড়া, ধাঁধাঁ, প্রবাদ-প্রবচন, লোকসঙ্গীত এই এলাকার সংস্কৃতির অংশ।
শিক্ষা ও স্বাস্থ্য:
শিক্ষার হার ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা এখানে রয়েছে। স্বাস্থ্য সেবার জন্য হাসপাতাল ও ক্লিনিক আছে।
দর্শনীয় স্থান:
লালমনিরহাটে দর্শনীয় স্থানের অভাব নেই। তিস্তা রেলওয়ে সেতু, বিমান ঘাঁটি, মোগলহাট জিরো পয়েন্ট, বিভিন্ন জমিদার বাড়ি, জাদুঘর, তিস্তা ব্যারেজ, বুড়িমারী স্থল বন্দর প্রভৃতি পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়।