মো. আব্দুল মতিন: একাধিক ব্যক্তি ও তাদের অবদান
এই নামটি দুই বা ততোধিক ব্যক্তির সাথে সম্পর্কিত। স্পষ্টতার জন্য, আমরা এখানে তাদের পৃথকভাবে আলোচনা করব:
১. মো. আব্দুল মতিন (ভাষা সৈনিক):
৩ ডিসেম্বর ১৯২৬ সালে সিরাজগঞ্জের চৌহালি উপজেলার ধুবালীয়া গ্রামে জন্মগ্রহণকারী মো. আব্দুল মতিন ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের অন্যতম ভাষা সৈনিক ছিলেন। তার ব্যক্তিত্ব ও ভাষা আন্দোলনে অবদান ছিল অসাধারণ। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন এবং ২১শে ফেব্রুয়ারির ঐতিহাসিক জনসভার সভাপতিত্ব করেছিলেন। ভাষা আন্দোলনের পর তিনি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি হন এবং পরবর্তীতে কমিউনিস্ট আন্দোলনেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। তিনি একাধিক বামপন্থী রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত ছিলেন এবং বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ২০০১ সালে তিনি একুশে পদক লাভ করেন। ৮ অক্টোবর ২০১৪ সালে ঢাকার একটি হাসপাতালে তিনি মারা যান।
২. মো. আব্দুল মতিন (বীর মুক্তিযোদ্ধা):
একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল মতিন, যার জন্ম তারিখ অজানা, ২০০৯ সালে মারা যান। স্বাধীনতা যুদ্ধে অসাধারণ সাহসিকতার জন্য তিনি বীর প্রতীক খেতাব লাভ করেন। তিনি চট্টগ্রাম-ঢাকা রেলপথে মাস্তাননগর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তার মৃত্যু ২০০৯ সালে হয়েছে। তিনি মৌলভীবাজার জেলার সদর উপজেলার রসুলপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
৩. মো. আব্দুল মতিন (সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি):
একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. আব্দুল মতিন, যিনি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বই রচনা করেছেন। প্রথম আলো পত্রিকার সাক্ষাৎকারে তিনি রাষ্ট্রীয় রাজনীতি এবং বিচার ব্যবস্থা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে মতামত ব্যক্ত করেছেন।
৪. এম. এ. মতিন (বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত):
৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৩ সালে কিশোরগঞ্জের তাড়াইলের কাজলা গ্রামে জন্মগ্রহণকারী এম. এ. মতিন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ও মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য তিনি বীর প্রতীক খেতাব লাভ করেন। তিনি ২০০৮-০৯ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন।
৫. এম. এ. মতিন (বিপ্লবী নেতা):
২০ নভেম্বর ১৯৬০ - ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ময়মনসিংহ জেলার একজন আজীবন বিপ্লবী, শ্রমিক ও কৃষক নেতা, মার্কসবাদী-লেনিনবাদী-মাওবাদী বুদ্ধিজীবি, কবি, গীতিকার, প্রাবন্ধিক। তিনি দরিদ্র ও নিপীড়িত মানুষের বন্ধু এবং কমরেড সিরাজ সিকদারের একনিষ্ঠ অনুসারী ছিলেন।