ঢাকা সিটি কর্পোরেশন: ঢাকা শহরের ইতিহাসের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ
ঢাকা সিটি কর্পোরেশন (ডিসিসি) বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার পূর্বতন স্থানীয় সরকার সংস্থা। ১৮৬৪ সালের ৩ নং আইনের মাধ্যমে ঢাকা মিউনিসিপ্যালিটি প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে এর যাত্রা শুরু হয়। এই আইন ঢাকা শহরের কোন কোন এলাকা মিউনিসিপ্যালিটির অন্তর্ভুক্ত হবে তা নির্ধারণ করে। ১৮৫৯ সালে ঢাকা রেভিনিউ সার্ভেয়ার কর্তৃক তৈরি শহরের মানচিত্র ঢাকা মিউনিসিপ্যালিটির ভৌগোলিক সীমানা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একুশজন কমিশনার নিয়ে যাত্রা শুরু করা ঢাকা মিউনিসিপ্যালিটি ঘরবাড়ি ও সম্পদের উপর কর আরোপের মাধ্যমে শহরের উন্নয়ন কাজ শুরু করে। ১৮৬৩-৬৪ সালে মোট করের পরিমাণ ছিল ১৯৮৬০ টাকা। পরবর্তীতে চাকাওয়ালা গাড়ি, ঘোড়া, হাতি, বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, এমনকি শৌচাগারের উপরও কর আরোপ করা হয়। ১৮৭৩ সালের ২ নং আইন ঢাকা মিউনিসিপ্যালিটির কমিশনার, চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচনের অধিকার জনগণের হাতে তুলে দেয়। তবে স্থানীয় প্রশাসনের বাধা ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগের মধ্যেই ১৮৮৪ সালে ৩ নং আইনের মাধ্যমে ঢাকার জনগণ ঢাকা মিউনিসিপ্যালিটির কমিশনার নির্বাচনের সুযোগ পায়। ১৮৮৫ সালে আনন্দচন্দ্র রায় প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান হন।
১৯৭৮ সালে ঢাকা মিউনিসিপ্যালিটি ঢাকা সিটি কর্পোরেশনে রূপান্তরিত হয়। এর বিভিন্নমুখী কার্য পরিচালনার জন্য আটটি স্ট্যান্ডিং কমিটিসহ একাধিক কমিটি কাজ করতো। প্রায় ১১,০০০ কর্মচারী ঢাকা শহরের বিভিন্ন সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। ২০১১ সালের ১৯ নভেম্বর জাতীয় সংসদে পাস হওয়া স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) (সংশোধনী) বিল, ২০১১ এর মাধ্যমে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন বিলুপ্ত হয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন গঠিত হয়। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ৩৬টি ওয়ার্ড এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ৫৬টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত।