পল্লবী

ঢাকা মহানগরীর উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত পল্লবী থানা ঢাকা জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ইউনিট। ১৯৯৫ সালের ১৫ই মার্চ এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। তুরাগ নদী, উত্তরা, মিরপুর, শাহ আলী, বিমানবন্দর, ক্যান্টনমেন্ট এবং কাফরুল থানা ও সাভার উপজেলার সীমানা দিয়ে বেষ্টিত পল্লবী থানার আয়তন প্রায় ২৫.২৮ বর্গ কিলোমিটার। ২০১১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী, এখানকার জনসংখ্যা প্রায় ৫৯৬,৮৩৫, যার মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ২২১৪১১ এবং মহিলার সংখ্যা ১৯০৮০৬। মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ বিভিন্ন ধর্মের মানুষ এখানে বসবাস করে। এই থানায় ১টি ইউনিয়ন/ওয়ার্ড, ১৬+২৭টি মৌজা/মহল্লা রয়েছে।

পল্লবী থানার অর্থনীতি মূলত কৃষি, অকৃষি শ্রমিক, শিল্প, ব্যবসা, পরিবহণ, চাকরি, নির্মাণ, ধর্মীয় সেবা, ভাড়া ও প্রবাসী আয়ের উপর নির্ভরশীল। এখানে টেক্সটাইল, রাসায়নিক, পোশাক ও ডাইং কারখানা রয়েছে। জামদানি, মৃৎশিল্প, হস্তশিল্প, বাঁশ ও বেতের কাজের মতো কুটিরশিল্পও এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মিরপুর বেনারশী পল্লী, পূরবী সুপার মার্কেট, সিটি কর্পোরেশন মার্কেট ও অনিক প্লাজা মতো বাজার ও শপিং সেন্টার এ থানার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরে। তৈরি পোশাক, জামদানি ও কাতান শাড়ি এ থানার প্রধান রপ্তানিদ্রব্য।

শিক্ষার দিক থেকে পল্লবী থানা অপেক্ষাকৃত উন্নত। এখানে বেশ কিছু কলেজ, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং মাদ্রাসা রয়েছে। মিরপুর গার্লস আইডিয়াল ল্যাবরেটরি ইনস্টিটিউট, সামরিক বাহিনী কমান্ড ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালস, মিলিটারি ইনস্টিটিউট অফ সাইন্স এন্ড টেকনোলোজি, শহীদ জিয়া স্মৃতি মহিলা মহাবিদ্যালয় সহ আরো অনেক উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত পল্লবী থানায় মিরপুর ১২ নং ক্যান্টনমেন্ট এলাকা, মুসলিম বাজার বধ্যভূমি, নূরানী মসজিদ সংলগ্ন গণকবর ইত্যাদি স্মৃতিচিহ্ন রয়েছে। এছাড়াও, বড় মসজিদ, লালমাঠ ঈদগাহ মসজিদ, বিভিন্ন ক্লাব, সাহিত্য সংগঠন, কমিউনিটি সেন্টার, সিনেমা হল, খেলার মাঠ ইত্যাদি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানও এখানে অবস্থিত। পল্লবী থানার উন্নয়নে বিভিন্ন এনজিও যেমন ব্র্যাক, প্রশিকা, আশা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

মূল তথ্যাবলী:

  • ১৯৯৫ সালের ১৫ই মার্চ পল্লবী থানা প্রতিষ্ঠিত হয়।
  • প্রায় ২৫.২৮ বর্গ কিলোমিটার আয়তন।
  • জনসংখ্যা প্রায় ৫৯৬,৮৩৫।
  • মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতিচিহ্ন রয়েছে।
  • শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান সমৃদ্ধ।
  • বিভিন্ন এনজিও উন্নয়নে অবদান রাখে।