বাংলাদেশে, বিশেষ করে সিলেট ও টাঙ্গাইলের মতো অঞ্চলে অবৈধভাবে পাহাড় ও টিলা কাটা এক জাতীয় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এই অবৈধ কার্যকলাপ প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট করে, পরিবেশ দূষণ করে, এবং ভূমি ক্ষয়ের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। অনেক ক্ষেত্রে রাতের আঁধারে এক্সকেভেটর ব্যবহার করে এই কাজ সম্পন্ন করা হয়, যা স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারি এড়াতে সহায়ক। ইটভাটাগুলো এই অবৈধ মাটির প্রধান ক্রেতা, এবং মাটি সংগ্রহের প্রতিযোগিতায় তারা রত।
২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় ব্যাপকহারে অবৈধ টিলা কাটার ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। স্থানীয় প্রশাসনের তদারকি থাকা সত্ত্বেও রাতের বেলায় অবৈধভাবে টিলা কাটা অব্যাহত ছিল। স্থানীয়দের অভিযোগ, বহু বছর ধরে এই অবৈধ ব্যবসা চলে আসছে এবং প্রভাবশালীদের চাপের কারণে স্থানীয়রা অভিযোগ করতেও ভয় পায়। মির্জাপুরে ১০৫টি ইটভাটা রয়েছে, এবং ইট পোড়ানোর মৌসুম শুরু হলে মাটির চাহিদা বৃদ্ধি পায়। আজগানা, বাশঁতৈল, গোড়াই, ফতেপুর এবং পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে এই অবৈধ কাজ দেখা গেছে।
এই অবৈধ কার্যকলাপের কারণে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন লঙ্ঘিত হচ্ছে। আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি প্রযোজ্য হলেও, বাস্তবে তা প্রয়োগ করা হচ্ছে না। সিলেটেও পাহাড়-টিলা কাটার ঘটনা ঘটেছে, যেখানে ২০১২-২০২১ সালের মধ্যে ৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অবৈধ টিলা কাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় আলমগীর মিয়াকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয় এবং সিলেটের দলইপাড়ায় আব্দুল আহাদ ঝুটনকে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তবে অবৈধ কার্যকলাপ বন্ধ করার জন্য আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। এই ব্যাপারে সরকারী ও বেসরকারী সংস্থাগুলির সমন্বিত প্রয়াস অত্যন্ত জরুরি।