সোনামসজিদ স্থলবন্দর: বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর
বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য স্থলবন্দরগুলির মধ্যে সোনামসজিদ স্থলবন্দর অন্যতম। রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার শাহাবাজপুর ইউনিয়নে অবস্থিত এই বন্দরটি শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদ থেকে প্রায় ১৯ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। ১৯৯২ সালে এর কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর হিসেবে পরিচিত।
বন্দরের কার্যক্রম: সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে বছরজুড়ে ফল, কয়লা, পাথর, মসলা এবং কৃষি পণ্য আমদানি করা হয়। এই বন্দরের সঙ্গে প্রায় ৬০০ শ্রমিক জড়িত। এখান দিয়ে প্রতিদিন ৩০০-৩৫০ ভারতীয় ট্রাক আমদানি পণ্য নিয়ে যাতায়াত করে, যার বেশিরভাগই পাথর বোঝাই। বন্দরের কার্যক্রম প্রায় ২০ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। জায়গা সংকটের কারণে ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টরা নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়। ৩১টি শ্রমিক সংগঠন এবং একটি 'সমন্বয় শ্রমিক সংগঠন' এই বন্দরের সাথে যুক্ত।
সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ: বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন অপর্যাপ্ত। শ্রমিকদের জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা, চিকিৎসা কেন্দ্র ও অ্যাম্বুলেন্সের অভাব রয়েছে। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাও পর্যাপ্ত নয়। ২০ একর জমি নিয়ে বন্দরের কার্যক্রম পরিচালনা করা কঠিন, তাই জায়গা সম্প্রসারণের প্রয়োজন। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে বন্দরটি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ১৪২ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় করেছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা: জায়গা সংকটের সমাধানের জন্য সরকারের কাছে প্রায় ২২ একর জমির আবেদন করা হয়েছে। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য পাম্প বসানো এবং ট্যাংকি সংযোজনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখযোগ্য ঘটনা: ২০২৩ সালের জুলাই মাসে ভারতীয় ৩টি ট্রাকে আগুন লাগার ঘটনা বন্দরের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার অপর্যাপ্ততাকে উন্মোচন করেছে। দুর্গাপূজা উপলক্ষে বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম কয়েকদিনের জন্য বন্ধ থাকে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছিলেন, পরবর্তীতে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হয়।
উপসংহার: সোনামসজিদ স্থলবন্দর বাণিজ্যিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অবকাঠামো উন্নয়ন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার এবং জায়গা সম্প্রসারণের মাধ্যমে এর সক্ষমতা আরও বাড়ানো সম্ভব।