শিবগঞ্জ: একটি বহুমুখী উপজেলার রূপরেখা
বাংলাদেশে দুটি শিবগঞ্জ উপজেলা অবস্থিত—একটি নবাবগঞ্জ জেলায় এবং অপরটি বগুড়া জেলায়। উভয় উপজেলারই নিজস্ব ইতিহাস, ভৌগোলিক অবস্থান, জনসংখ্যা, অর্থনীতি এবং সংস্কৃতি রয়েছে।
- *নবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ:**
নবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার আয়তন ৫২৫.৪২ বর্গ কিমি। এটি ২৪°৩৪´ থেকে ২৪°৫৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°১০´ থেকে ৮৮°১৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। পদ্মা, মহানন্দা ও পাগলা নদী এবং গড়াইল ও দামাশ বিল এ উপজেলার উল্লেখযোগ্য জলাশয়। ১৯১৩ সালে শিবগঞ্জ থানা গঠিত হয় এবং ৭ নভেম্বর ১৯৮২ সালে থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয়। ২০০১ ও ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, জনসংখ্যা ৫৯১১৭৮। মুক্তিযুদ্ধের সময়, ১৯৭১ সালের ১০ অক্টোবর পাকবাহিনী দোরাশিয়া, মোল্লাটোলা, লম্পট ও রাধাকান্তপুর গ্রামের ৪৭ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। শিবগঞ্জের প্রাচীন নিদর্শনাদির মধ্যে ছোট সোনা মসজিদ, দরশবাড়ি মসজিদ, ধনাইচকের মসজিদ, শাহ সুজার কাছাড়ি বাড়ি উল্লেখযোগ্য। কৃষি, ব্যবসা, এবং চাকুরীজনিত কাজ এখানকার জনগোষ্ঠীর প্রধান আয়ের উৎস।
- *বগুড়ার শিবগঞ্জ:**
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার আয়তন ৩১৪.৯২ বর্গ কিমি। এটি ২৪°৫৫´ থেকে ২৫°০৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°১১´ থেকে ৮৯°২৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। করতোয়া, নাগর, গানী, গজারিয়া প্রভৃতি নদী এ উপজেলার জলাশয়। ২৪ মার্চ ১৯৮৩ সালে এ উপজেলা গঠিত হয়। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী জনসংখ্যা ৩৭৮৭০০। ঐতিহাসিক মহাস্থানগড় এ উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থান। মুক্তিযুদ্ধের সময়, ১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল পাকবাহিনী ময়দানহাটার একটি পরিবারের ১৬ জন সদস্যকে হত্যা করে। এখানে কৃষিকাজ প্রধান পেশা।
- *উভয় শিবগঞ্জের সাধারণ বৈশিষ্ট্য:**
উভয় শিবগঞ্জেই কৃষি প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র রয়েছে। তবে, জনসংখ্যা, ভৌগোলিক অবস্থান, এবং ঐতিহাসিক ঘটনাগুলির বিস্তারিত বিবরণে পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।