সিদনায়া কারাগার

আপডেট: ৪ জানুয়ারী ২০২৫, ৩:২৬ এএম

সেদনায়া কারাগার: সিরিয়ার অমানবিকতার এক কলঙ্কজনক প্রতীক

সেদনায়া কারাগার, সিরিয়ার দামেস্কের ৩০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত রিফ দামাস্কাস এলাকায় অবস্থিত একটি কুখ্যাত সামরিক কারাগার। "মানব কসাইখানা" হিসেবে পরিচিত এই কারাগারটি বাশার আল-আসাদ সরকারের নিপীড়নের এক ভয়াবহ প্রতীক। এখানে হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিক, সরকারবিরোধী বিদ্রোহী এবং রাজনৈতিক বন্দীদের বন্দী করে রাখা হতো।

কারাগারের ইতিহাস ও কার্যকলাপ:

১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত সেদনায়া কারাগার প্রথম দিকে চরমপন্থীদের জন্য ব্যবহৃত হলেও পরবর্তীতে আরব বসন্তের পর থেকে এটি সরকারবিরোধীদের দমন-পীড়নের প্রধান কেন্দ্রে পরিণত হয়। কারাগারের দুটি ভবন, "সাদা" ও "লাল" ভবন ছিল। "লাল" ভবনে সাধারণ বেসামরিক বন্দীদের, এবং "সাদা" ভবনে রাজনৈতিক বন্দী ও কর্মকর্তাদের রাখা হতো।

অমানবিক নির্যাতন ও গণহত্যা:

সেদনায়া কারাগারের ভেতরে বন্দীদের উপর ব্যাপকহারে অমানবিক নির্যাতন চালানো হতো। নির্যাতনের ধরনগুলির মধ্যে ছিল অবিরাম প্রহার, যৌন নির্যাতন, শিরশ্ছেদ, ধর্ষণ, দগ্ধ করা এবং "উড়ন্ত কার্পেট" নামে পরিচিত একধরণের নির্যাতন। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়, হাজার হাজার বন্দীকে এই কারাগারে নির্যাতন ও ফাঁসির মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদনে ২০১১ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ৫,০০০ থেকে ১৩,০০০ মানুষকে বিনা বিচারে হত্যা করা হয়েছে বলে অনুমান করা হয়েছে। সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (SOHR) অনুমান করে, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ শুরুর পর থেকে ৩০,০০০ এরও বেশি বন্দি সেদনায়া কারাগারে নির্যাতন ও গণ-ফাঁসির মাধ্যমে নিহত হয়েছে।

সিজার রিপোর্ট:

২০১৪ সালে সিরিয়ার একজন ফরেনসিক ফটোগ্রাফার "সিজার" হাজার হাজার নির্যাতিত ও নিহত বন্দীর ছবি পাচার করেছিলেন। এই ছবিগুলি "সিজার রিপোর্ট" নামে পরিচিত হয়েছে এবং সেদনায়া কারাগারের ভয়াবহতার প্রমাণ হিসেবে কাজ করেছে।

কারাগারের দখল:

২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বর বিদ্রোহী বাহিনী দামেস্কে অগ্রসর হওয়ার সময় সেদনায়া কারাগার দখল করে এবং বন্দীদের মুক্তি দেয়।

আন্তর্জাতিক সমালোচনা:

সেদনায়া কারাগারের ঘটনাগুলি বিশ্বব্যাপী নিন্দা ও আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি উত্থাপন করেছে। আসাদ সরকারের এই অমানবিক কাজের জন্য তাদের জবাবদিহি দাবি করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলি।

উল্লেখযোগ্য বিষয়:

  • সেদনায়া কারাগারের অত্যাচারের প্রকৃতি এবং ব্যাপ্তি সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য রয়েছে।
  • কারাগারের অনেক বন্দী এখনও নিখোঁজ থাকার কারণে তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।
  • এই কারাগারে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলি সিরিয়ার মানবাধিকারের অবস্থা এবং আসাদ সরকারের নির্যাতনমূলক পদ্ধতি সম্পর্কে আলোকপাত করে।

যেহেতু সেদনায়া কারাগার সম্পর্কে এখনও অনেক তথ্য গোপন থাকতে পারে, আমরা আপনাকে ভবিষ্যতে আরও বিস্তারিত তথ্য প্রদান করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।

মূল তথ্যাবলী:

  • সেদনায়া কারাগার সিরিয়ার দামেস্কের ৩০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
  • এটি "মানব কসাইখানা" নামেও পরিচিত।
  • এখানে হাজার হাজার বন্দীকে নির্যাতন ও হত্যা করা হয়েছে।
  • অ্যামনেস্টি ও SOHR এর প্রতিবেদনে গণহত্যার বিষয়টি উঠে এসেছে।
  • ২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বর বিদ্রোহী বাহিনী কারাগারটি দখল করে।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - সিদনায়া কারাগার

৩ জানুয়ারি

সিদনায়া কারাগারে বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্যাতন এবং গুমের অভিযোগ রয়েছে।