শ্রম আন্দোলন

আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১:০৭ পিএম

বাংলাদেশের শ্রম আন্দোলনের ইতিহাস: ১৯৪৭ সালের পূর্বে পূর্ব বাংলায় (বর্তমান বাংলাদেশ) শিল্পায়ন ছিল খুবই সীমিত। চট্টগ্রাম ও সিলেটের প্রায় ২৫টি চা-বাগানে ১২,০০০ শ্রমিক এবং ৬টি টেক্সটাইল মিলে (৪টি ঢাকায়, ১টি কুষ্টিয়া ও ১টি খুলনায়) প্রায় ১০,০০০ শ্রমিক কর্মরত ছিল। চট্টগ্রাম বন্দরেও কিছু শ্রমিক ছিল। চা-বাগানের শ্রমিকরা বেশিরভাগই ছোটনাগপুর অঞ্চলের আদিবাসী ছিল, অন্যরা স্থানীয় হিন্দু ও মুসলমান সম্প্রদায়ের।

খিলাফত ও অসহযোগ আন্দোলনের (১৯২০-২২) সময় প্রথম শ্রমিক অসন্তোষের লক্ষণ দেখা যায়। চা-বাগানের শ্রমিকরা সিলেটের চারগোলা উপত্যকা (আসাম) ছেড়ে চলে যায়। ১৯২১ সালের মে মাসে ইস্ট বেঙ্গল রেলওয়ে ও চাঁদপুর স্টিমার সার্ভিসের কর্মচারীরা ধর্মঘট করে। চাঁদপুরের কুলীরা দুঃখকষ্ট ভোগ করে। এটি বাংলার অসহযোগ আন্দোলনের একটি বড় বিজয় হিসেবে বিবেচিত হয়। ১৯২১ সালের আগস্টে গান্ধীর অনুরোধে ধর্মঘটের অবসান হয়। চট্টগ্রামে ১৯২১ সালের এপ্রিল-মে মাসে বার্মা অয়েল কোম্পানির শ্রমিক অসন্তোষে জে.এম সেনগুপ্ত নেতৃত্ব দেন।

১৯২৭ সালে ঢাকেশ্বরী কটন মিল শ্রমিক ইউনিয়ন গঠিত হয় কিন্তু কয়েকটি ধর্মঘটের ফলে ইউনিয়নটি দুর্বল হয়ে পড়ে। মহামন্দার কারণে শ্রমিক আন্দোলনে ভাটা পড়ে। কম্যুনিস্টদের তৎপরতার কারণে শিল্প প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপকগণ কংগ্রেস ও অনুশীলন সমিতির মতো অ-কম্যুনিস্ট সংগঠনগুলিকে সহায়তা দিতে থাকে। ১৯৩৭-৪০ সালে বস্ত্রশিল্পে বেশ কিছু তীব্র ধর্মঘট হয় (কুষ্টিয়ার মোহিনী মিল ও ঢাকেশ্বরী মিল)। কিন্তু এসব আন্দোলন সুসংগঠিত হয়নি। যুদ্ধকালীন সময়ে ঢাকা শান্ত ছিল, কিন্তু যুদ্ধশেষে ১৯৪৫-৪৬ সালে খুলনার আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র মিল ও ঢাকার চারটি মিলে সহিংস ধর্মঘট হয়।

১৯৪২ সাল থেকে চট্টগ্রামের চা-বাগান শ্রমিকরা স্থানীয় কম্যুনিস্ট পার্টির সাথে যুক্ত ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর কালে তারা ধর্মঘট করে কিছুটা সাফল্য পায়। দেশ বিভাগের পর কম্যুনিস্ট সংগঠকরা ভারতে চলে যায়। নেতৃত্বের অভাবে শ্রমিক সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়ে। ইস্ট বেঙ্গল রেলওয়ের শ্রমিকরা ছিল সবচেয়ে সংগঠিত, কিন্তু জাতীয়তাবাদী ও কম্যুনিস্ট নিয়ন্ত্রিত ইউনিয়নে বিভক্ত ছিল। এই তথ্যের ভিত্তিতে একটি সম্পূর্ণ নিবন্ধ লেখা সম্ভব নয়। আমরা যখন আরও তথ্য পাব, তখন আপনাকে অবগত করা হবে।

মূল তথ্যাবলী:

  • ১৯২০-২২ সালে খিলাফত ও অসহযোগ আন্দোলনের সময় শ্রমিক অসন্তোষের প্রথম লক্ষণ দেখা যায়।
  • ১৯২৭ সালে ঢাকেশ্বরী কটন মিল শ্রমিক ইউনিয়ন গঠিত হয়।
  • ১৯৩৭-৪০ সালে বস্ত্রশিল্পে বেশ কয়েকটি তীব্র ধর্মঘট হয়।
  • ১৯৪৫-৪৬ সালে খুলনা ও ঢাকায় সহিংস শ্রমিক অসন্তোষের পুনরুত্থান ঘটে।
  • চট্টগ্রামের চা-বাগান শ্রমিকরা ১৯৪২ সাল থেকে স্থানীয় কম্যুনিস্ট পার্টির কার্যক্রমের সাথে যুক্ত ছিল।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।