বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন: একটি বিশ্লেষণ

২০২৪ সালের গ্রীষ্মের শুরুতে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় বিদ্যমান বৈষম্যের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের একটি ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয়, যা 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন' নামে পরিচিতি লাভ করে। এই আন্দোলন কোটা ব্যবস্থার সংস্কার, শিক্ষা ব্যবস্থায় সমতা প্রতিষ্ঠা এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষার দাবিতে গড়ে উঠে।

  • *আন্দোলনের উত্থান:** ১ জুলাই, ২০২৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে আন্দোলন শুরু হয়। শুরুতে ৬৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠিত হয়, যা পরবর্তীতে ১৫৮ সদস্যে বৃদ্ধি পায়। আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মূল নেতৃত্বের মধ্যে ছিলেন নাহিদ ইসলাম, রিফাত রশিদ, সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ, আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদার, খান তালাত মাহমুদ রাফি, আরিফ সোহেল প্রমুখ।
  • *আন্দোলনের কর্মসূচী:** আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে, যার মধ্যে রয়েছে বিক্ষোভ সমাবেশ, মানববন্ধন, মহাসড়ক অবরোধ, ঢাকা শহরের গণপরিবহন বন্ধ (বাংলা ব্লকেড) এবং শাটডাউন কর্মসূচি। এই কর্মসূচীতে শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রলীগ ও পুলিশের হামলার ঘটনা ঘটে।
  • *সরকারের প্রতিক্রিয়া:** প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোটা আন্দোলনকারীদের সমালোচনা এবং 'রাজাকারের নাতি-পুতি' বলে আখ্যায়িত করার পর আন্দোলনের তীব্রতা আরও বেড়ে যায়। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা নতুন স্লোগান তৈরি করে এবং আন্দোলন আরও তীব্রতর হয়। আন্দোলনের সময় অনেক সমন্বয়ককে গ্রেফতার করা হয় এবং অনেকেই নিখোঁজ হন।
  • *আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়:** আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে অসহযোগ আন্দোলন ঘোষণা করা হয়। শহীদ মিনারে এক সমাবেশে সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবি জানানো হয়। 'লং মার্চ টু ঢাকা' কর্মসূচী ব্যাপক সংঘর্ষের সৃষ্টি করে। ৫ আগস্ট, ২০২৪ শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেন এবং একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। মুহম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে এই সরকার গঠিত হয়, এবং নতুন সরকারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কিছু নেতা উপদেষ্টা হিসেবে যোগদান করেন।
  • *আন্দোলনের ঐতিহাসিক গুরুত্ব:** বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এটি শিক্ষার্থীদের অধিকার আন্দোলনের ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায় যুক্ত করে। এই আন্দোলন দেখিয়েছে যে, শিক্ষার্থীরা দেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

মূল তথ্যাবলী:

  • ২০২৪ সালে শুরু হওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কোটা ব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে সংগঠিত হয়।
  • আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন ঢাকা, চট্টগ্রাম ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
  • আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ, মানববন্ধন, মহাসড়ক অবরোধ এবং শাটডাউন কর্মসূচী পালন করে।
  • প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনার পর আন্দোলন আরও তীব্র হয়।
  • অসহযোগ আন্দোলনের পর শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেন এবং একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়।

গণমাধ্যমে - বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

২২ ডিসেম্বর ২০২৪

এই সংগঠন রংপুরের তথ্য মেলায় ঘটে যাওয়া লিফলেট বিতরণের ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছে।

২২ ডিসেম্বর ২০২৪

এই সংগঠন আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিরোধিতা করছে।

২২ ডিসেম্বর, ২০২৪

এই আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতার উপর হামলার অভিযোগে ছুরত আলীকে গণধোলাই দেওয়া হয়।