নোবিপ্রবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন: একটি বিশ্লেষণ
২০২৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে শুরু হওয়া ছাত্র আন্দোলন দ্রুতই একটি ব্যাপক জন-আন্দোলনে রূপান্তরিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক হলেও দেশের বিভিন্ন প্রান্তের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সাধারণ নাগরিক ও রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা এতে অংশগ্রহণ করেন। 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন' নামে পরিচিত এ আন্দোলনটির মূল নেতৃত্ব দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি সমন্বয়ক দল। আন্দোলনকারীদের মূল দাবি ছিল কোটা ব্যবস্থার বিলোপ এবং মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা।
আন্দোলনের গতিপ্রক্রিয়া:
আন্দোলন শুরু হয় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে। কিন্তু সরকারের দমন-পীড়নের মুখে আন্দোলন আরও তীব্র আকার ধারণ করে। রাস্তা অবরোধ, গণপরিবহন বন্ধ, সর্বাত্মক হরতাল ইত্যাদি কর্মসূচি পালিত হয়। এসব কর্মসূচিতে আন্দোলনকারীরা ছাত্রলীগ ও পুলিশি হামলার শিকার হয়। অনেক শিক্ষার্থী আহত ও নিহত হন। আন্দোলনের নেতৃত্বের বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তার ও গুমের ঘটনা ঘটে।
প্রধান ব্যক্তিবর্গ:
এই আন্দোলনের সাথে জড়িত অনেক নেতা-কর্মী ছিলেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন নাহিদ ইসলাম, রিফাত রশিদ, সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ, আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদার, খান তালাত মাহমুদ রাফি এবং আরিফ সোহেল। এদের মধ্যে অনেকেই পরবর্তীতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
আন্দোলনের পরিণতি:
ব্যাপক জনসমর্থন ও আন্দোলনের তীব্রতার কারণে শেখ হাসিনা সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। পরবর্তীতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এই আন্দোলন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয়।
উল্লেখযোগ্য তারিখ:
- ২০২৪ সালের ১ জুলাই: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আনুষ্ঠানিক শুরু।
- ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট: শেখ হাসিনা সরকারের পতন।
স্থান:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শহীদ মিনার, ঢাকা মহানগরী, দেশের বিভিন্ন স্থান।
আন্দোলনের প্রভাব:
এই আন্দোলন বাংলাদেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপটে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছে। এটি জনগণের ক্ষমতা ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রভাবের একটি প্রমাণ। যদিও এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব সম্পর্কে আরও বিশ্লেষণের প্রয়োজন।