বাংলাদেশে তাপপ্রবাহ: একটি বিশ্লেষণ
বাংলাদেশে তাপপ্রবাহ একটি বর্ষজুড়ে ঘটনা নয়, বরং প্রতি বছরই এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে এটি দেখা যায়। তবে চলতি বছরের তাপপ্রবাহের তীব্রতা ও সময়কাল উল্লেখযোগ্য। এপ্রিল মাসের শুরু থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে তাপপ্রবাহের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় যা গত নয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। তাপপ্রবাহের প্রভাব বিভিন্ন জেলায় ভিন্ন ভিন্ন। কিছু জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহের অভিজ্ঞতা হলেও অন্যত্র মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে।
এই তাপপ্রবাহের বেশ কয়েকটি উদ্বেগজনক দিক রয়েছে। প্রথমত, তাপপ্রবাহের স্থায়িত্ব; চুয়াডাঙ্গা সহ কিছু স্থানে তাপপ্রবাহ ১৪ দিন চলে যা আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের মতে অস্বাভাবিক। দ্বিতীয়ত, আর্দ্রতার অভাব। চুয়াডাঙ্গায় আর্দ্রতা ৮% পর্যন্ত নেমে গিয়েছে, যা স্বাভাবিক আর্দ্রতার চেয়ে অনেক কম। এর ফলে মানুষের ঘাম কম হচ্ছে এবং তাপের প্রভাব বেশি অনুভূত হচ্ছে।
তাপপ্রবাহের প্রভাব শুধুমাত্র জনজীবনেই সীমাবদ্ধ নয়। কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। ফসলের উৎপাদন কমছে, শ্রমিকদের কর্মক্ষমতা কমে যাচ্ছে, আরও অনেক নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। তাপপ্রবাহের কারণ জলবায়ু পরিবর্তন সহ বিভিন্ন কারণ মিলিত রয়েছে বলে মনে করা হয়। ইট-কংক্রিটের অতিরিক্ত নির্মাণ এবং গাছপালার কমে যাওয়া এই প্রক্রিয়াকে তেজস্ক্রিয় করছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে এবং জনসাধারণের জন্য বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছে। তবে এই তাপপ্রবাহ এখনও কতদিন চলবে তা নিশ্চিত ভাবে বলা যাচ্ছে না। আগামী দিনগুলোতে আবহাওয়ার পূর্বাভাসের উপর এর নির্ভর করতে হবে। আমরা আপনাকে আপডেট করবো যখনই আরও তথ্য উপলব্ধ হবে।