মৃত্যু: জীবনের অবসান, জীববিজ্ঞান, ধর্ম ও দর্শনের দৃষ্টিকোণ থেকে
মানুষের জীবনে মৃত্যু এক অপরিহার্য সত্য। জীববিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে মৃত্যু হলো জীবনের সম্পূর্ণ অবসান, যখন শ্বসন, হৃৎস্পন্দন, মস্তিষ্কের কার্যকলাপ সব থেমে যায়। এর সাথে শারীরিক পরিবর্তন, যেমন আলগর মর্টিস, রিগর মর্টিস, লিভর মর্টিস ঘটে। বিভিন্ন অঙ্গের মৃত্যুও ভিন্ন সময়ে ঘটে, যার কারণে অঙ্গদান সম্ভব। মৃত্যুর সংজ্ঞা নির্ণয় কঠিন কারণ জীবনের সমাপ্তি একই সময়ে সকল অঙ্গে ঘটে না। সচেতনতার অভাবকে মৃত্যুর চিহ্ন হিসেবে ধরা হলেও এটি সকল জীবের জন্য প্রযোজ্য নয়।
ধর্মীয় ও দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি মৃত্যুকে ভিন্নভাবে দেখে। হিন্দুধর্মে আত্মার পুনর্জন্মের বিশ্বাস, বৌদ্ধধর্মে চক্রান্তের অবসান ও নির্বাণের ধারণা, খ্রিস্টধর্মে পুনরুত্থানের প্রত্যাশা ও ইসলামে আখিরাতের বিশ্বাস রয়েছে। মৃত্যুর পর কী ঘটে তা নিয়ে বিভিন্ন ধর্মের বিভিন্ন বিশ্বাস রয়েছে।
বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর কারণগুলি পরিবেশ ও অর্থনৈতিক অবস্থার উপর নির্ভর করে। উন্নয়নশীল দেশে সংক্রামক রোগ প্রধান কারণ, যেমন যক্ষ্মা ও ম্যালেরিয়া। উন্নত দেশে হৃদরোগ, ক্যান্সার, স্ট্রোক ও বার্ধক্যজনিত রোগ বেশি। আত্মহত্যা ও দুর্ঘটনাও মৃত্যুর উল্লেখযোগ্য কারণ। পুষ্টিহীনতা এবং ধূমপানও বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর এক প্রধান কারণ। বিজ্ঞান বার্ধক্যের কারণ খুঁজে পেতে চেষ্টা করছে এবং দীর্ঘায়ু বাড়ানোর উপায় খুঁজছে।
মৃত্যুর পর দেহের পচন, ব্যাকটেরিয়া ও উৎসেচকের কারণে ঘটে। অটোপসির মাধ্যমে মৃত্যুর কারণ নির্ণয় করা যায়। জীববৈচিত্র্যের ক্ষেত্রে প্রজাতির বিলুপ্তি হলো মৃত্যুর একটা বৃহৎ রূপ। আর, যেখানে জীবিত জীবের মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে, সেখানে একইভাবে প্রজাতির বিলুপ্তির ও মৃত্যুর সাথে তুলনা করা সম্ভব।