গাংনী থানা: মেহেরপুর জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ইউনিট
গাংনী থানা মেহেরপুর জেলার অন্তর্গত একটি প্রাচীন ও গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ইউনিট। ১৯২৩ সালে থানা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ২৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৪ সালে এটি উপজেলায় রূপান্তরিত হয়। গাংনী নামের উৎপত্তি নিয়ে বিভিন্ন মতবাদ রয়েছে। কোনো কোনো মতে এটি নদীর নামের সাথে সম্পর্কিত, আবার কোনো কোনো মতে এটি এ অঞ্চলের ভৌগোলিক পরিবেশের সাথে সম্পর্কিত। উপজেলার আয়তন ৩৪৪.৪৭ বর্গ কিলোমিটার এবং ২০১৮ সালের হিসেবে জনসংখ্যা ছিল ২,৯৯,৬০৭ জন। গাংনী উপজেলার উল্লেখযোগ্য নদী হল ভৈরব নদী, হিশনা-ঝাঞ্চা নদী এবং কাজলা নদী।
ঐতিহাসিক দিক থেকে, গাংনী উপজেলা মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। রামনগর, তেঁতুলবাড়িয়া, কাজীপুর, পাগলার পুল ও বামুন্দি ক্যাম্পে পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের তীব্র সংঘর্ষ হয়েছিল। এছাড়াও, উপজেলার কাজীপুর ও টেপুখালির মাঠে দুটি গণকবর রয়েছে। মুন্সি শেখ জমিরউদ্দিন, একজন প্রখ্যাত ইসলাম প্রচারক ও সমাজ সেবক, গাংনী উপজেলার গাঁড়াডোব এলাকার বাসিন্দা ছিলেন এবং খেলাফত আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন। প্রখ্যাত বাংলাদেশী ক্রীড়াবিদ মোহাম্মদ শাহ আলমের জন্মও এই উপজেলার সাহেবনগর গ্রামে।
আধুনিক গাংনী উপজেলার অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর। ধান, পাট, গম, তামাক প্রভৃতি ফসল উৎপাদন হয়। এছাড়াও, মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে। শিক্ষার দিক থেকে, গাংনী ডিগ্রি কলেজ, গাংনী মহিলা কলেজ প্রভৃতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। সাংস্কৃতিক দিক থেকে, লাইব্রেরি, ক্লাব, নাট্যদল, সিনেমা হল ইত্যাদি রয়েছে। ভারতের সাথে এর সীমান্ত রয়েছে।
গাংনী থানার প্রশাসনিক কার্যক্রম অব্যাহতভাবে চলছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জনসেবার ক্ষেত্রে থানাটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।