খায়রুল বাশার নামটি একাধিক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পর্কিত হতে পারে, তাই তথ্যের স্পষ্টতার জন্য বিভিন্ন খায়রুল বাশার সম্পর্কে আলাদাভাবে আলোচনা করা হলো:
১. বীর মুক্তিযোদ্ধা খায়রুল বাশার খান:
খায়রুল বাশার খান (মৃত্যু: ২০০৭) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে। তার পৈতৃক বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামে। তিনি ইপিআরে চাকরি করতেন এবং ১৯৭১ সালে যশোর সেক্টরের ৫ নম্বর উইংয়ে কর্মরত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের পর তিনি ভারতে গিয়ে ‘জেড’ ফোর্সের অধীন প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে যোগ দেন। স্বাধীনতার পর ১৯৮৮ সালে বিজিবি থেকে উপপরিচালক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।
তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল ১৯৭১ সালের ২৮ ও ৩০ জুলাই জামালপুরের বকশিগঞ্জ উপজেলার কামালপুর গ্রামের মাঝামাঝি স্থানে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কামালপুর বিওপিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান চালানো। সালাহউদ্দিন মমতাজ (বীর উত্তম) এর নেতৃত্বে, খায়রুল বাশার ‘ডি’ দলে অংশ নিয়ে এই অভিযানে অংশগ্রহণ করেন।
২. অভিনেতা খায়রুল বাসার:
খায়রুল বাসার একজন অভিনেতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগে পড়াশোনা করেছেন। ২০১১ সালে মূকাভিনয়ের মাধ্যমে অভিনয় জীবন শুরু করেন। তিনি বেশ কিছু নাটক, ওয়েব সিরিজ এবং চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। ‘তোমার পাশে হাটতে দিও’ নাটক ও ‘উনপঞ্চাশ বাতাস’ চলচ্চিত্রে তার অভিনয় উল্লেখযোগ্য।
৩. খায়রুল বাশার আবু তাহের মোহাম্মদ:
খায়রুল বাশার আবু তাহের মোহাম্মদ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা (সিআরও) ছিলেন। মশিউর সিকিউরিটিজ থেকে বিনিয়োগকারীদের ১৬১ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে শোকজ করা হয়েছে। তার দায়িত্বকালীন ধানমন্ডি, পিএফআই ও সিনহা সিকিউরিটিজে একই ধরনের জালিয়াতি হয়েছে বলে অভিযোগ।
৪. খায়রুল বাসার (গীতিকবি):
একজন গীতিকবি যিনি অনেক গানের কবিতা রচনা করেছেন।
৫. মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মোহাম্মদ খায়রুল বাশার:
আবুল হাসনাত মোহাম্মদ খায়রুল বাশার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন মেজর জেনারেল। পরবর্তীতে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত হন এবং বর্তমানে লিবিয়ায় বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ১৭ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি এবং সিলেট এরিয়া কমান্ডার ছিলেন। বর্ডার গার্ডস বাংলাদেশের অতিরিক্ত মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ শিরোনামে আল-জাজিরার একটি তদন্ত অনুসারে, তিনি তার প্রাক্তন কমান্ডার জেনারেল আজিজ আহমেদকে তার পলাতক ভাই হারিস আহমেদের পরিচয়পত্র জাল করতে সাহায্য করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে, যদিও বাংলাদেশ সরকার তা অস্বীকার করেছে। তিনি ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের সিনিয়র ডিরেক্টিং স্টাফ (আর্মি-৩) ছিলেন।