বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে ব্যাংকিং খাতে ব্যাপক আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছে। প্রাথমিকভাবে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে বেশি কেলেঙ্কারি হলেও পরবর্তীতে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতেও এ ধরণের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই লেখায় বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের কিছু উল্লেখযোগ্য আর্থিক কেলেঙ্কারির বিবরণ দেওয়া হল:
হল-মার্ক কেলেঙ্কারি (২০১১): সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখা থেকে হল-মার্ক গ্রুপ প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা অর্থ আত্মসাৎ করে। এই কেলেঙ্কারিতে ব্যাংক কর্মকর্তা ও হল-মার্ক কর্মকর্তারা জড়িত ছিলেন।
ওরিয়েন্টাল ব্যাংক কেলেঙ্কারি (২০০৬): ওরিয়েন্টাল ব্যাংকের তৎকালীন উদ্যোক্তারা অনিয়মের মাধ্যমে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। পরে ব্যাংকটি পুনর্গঠন করা হয় এবং বিদেশি একটি ব্যবসায়ী গ্রুপের কাছে বিক্রি করা হয়।
ওম প্রকাশ কেলেঙ্কারি (২০০২): ওম প্রকাশ আগরওয়াল নামের এক ব্যবসায়ী জালিয়াতির মাধ্যমে পাঁচটি ব্যাংক থেকে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। এ ঘটনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ওই পাঁচ ব্যাংকের এমডিকে অপসারণ করেছিল।
বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারি (২০১১-১২): বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই (বাচ্চু) এর আমলে ব্যাপক লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ কারণে ব্যাংকটি লোকসানে পড়ে এবং বড় ধরনের মূলধন ঘাটতি দেখা দেয়।
শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি (১৯৯৬ ও ২০১০): ১৯৯৬ ও ২০১০ সালে দুই দফায় শেয়ারবাজারে বড় ধরনের কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটে। তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
বিসমিল্লাহ গ্রুপের অনিয়ম (২০১২-১৩): বিসমিল্লাহ গ্রুপ কয়েকটি ব্যাংক থেকে প্রায় ১২০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। ঘটনা প্রকাশের পর দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান গ্রুপের কর্মকর্তারা।
জনতা ব্যাংকের অ্যাননটেক্স ও ক্রিসেন্ট গ্রুপের ঋণ অনিয়ম: জনতা ব্যাংক অ্যাননটেক্স ও ক্রিসেন্ট গ্রুপকে অধিক পরিমাণ ঋণ প্রদান করে, যা পরবর্তীতে খেলাপি হয়ে যায়।
অন্যান্য কেলেঙ্কারি: ফার্মার্স ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংকের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনাও সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, এই লেখায় উল্লেখিত তথ্যগুলি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন এবং অন্যান্য প্রকাশিত তথ্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। আরও বিস্তারিত তথ্য পাওয়া গেলে এই লেখাটি আপডেট করা হবে।