ফেনীতে কুকুর হত্যার ঘটনায় অভিনব রায়: ১৫ কুকুরকে ৩ মাস খাওয়ানোর শর্তে আসামির মুক্তি
গত ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ফেনীতে একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনার পর আদালতের রায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ফেনী শহরের শান্তি কোম্পানি রোডে ৯টি বাচ্চাসহ দুইটি মা কুকুরকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত জসিম উদ্দিন নামে এক ব্যক্তিকে কারাদণ্ড বা জরিমানার পরিবর্তে ১৫টি কুকুরকে তিন মাস ধরে ঠিকভাবে খাওয়ানো এবং তাদের যত্ন নেওয়ার শর্তে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতের বিচারক অপরাজিতা দাস বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) এ আদেশ দেন। আদালতে হাজির হয়ে নিজের দোষ স্বীকার করেন জসিম উদ্দিন। তবে আদালত তাকে সাজা না দিয়ে শর্তসাপেক্ষে ৩ মাসের প্রবেশনে মুক্তি দেন। প্রবেশন চলাকালে তাকে ১৫টি কুকুরের খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে এবং তাদের যত্ন নিতে হবে। এমনকি কুকুর খাওয়ানোর ছবিসহ প্রতিবেদন তৈরি করে সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার মাধ্যমে আদালতে দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সফিকুল ইসলাম পিয়াস জানান, প্রাণী হত্যার ঘটনায় ফেনীতে এটিই প্রথম মামলা ছিল। আসামি জসিম উদ্দিন দোষ স্বীকার করায় আদালত তাকে তিন মাসের প্রবেশন দিয়েছেন। যদি প্রবেশনকালে শর্ত ভঙ্গ করেন, তাহলে আইন অনুযায়ী যেকোনো দণ্ড পেতে পারেন।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি জসিম উদ্দিন বিনা কারণে দুই মা কুকুর ও ৯টি বাচ্চাকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করেন। এ ঘটনায় ১ এপ্রিল এনিম্যাল এইড ফেনীর পরিচালক এনাম হোসেন বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে মামলা করেন। পরে আদালত ফেনী সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। ৯ জুলাই আদালত তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেন এবং প্রধান অভিযুক্ত জসিম উদ্দিনকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেন।
মামলার বাদী এনাম হোসেন বলেন, অনুমতি ছাড়া প্রকাশ্যে ১১টি কুকুর হত্যা করে আসামিরা প্রাণিকল্যাণ আইন লঙ্ঘন করেছে। অন্যায়ভাবে প্রাণী নিধন বন্ধের জন্যই আইনের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় আদালতের দেওয়া রায় ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে এবং প্রাণী কল্যাণ আইনের প্রয়োগের ব্যাপারে নতুন আলোকপাত করেছে।