প্রাণী নির্যাতন

আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ৪:৩৩ পিএম

বাংলাদেশে প্রাণী নির্যাতন: এক বেদনাদায়ক বাস্তবতা

বাংলাদেশে প্রাণী নির্যাতনের ঘটনা দুর্ভাগ্যজনকভাবে নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষের অসচেতনতা, নিষ্ঠুরতা এবং আইনের দুর্বল প্রয়োগের কারণে প্রাণীরা নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। ২০১৯ সালে নতুন 'প্রাণিকল্যাণ আইন' পাস হলেও এর প্রয়োগে অনেক জটিলতা এবং অনীহা রয়েছে। পরিণামে, প্রাণীদের নির্যাতন বন্ধে আইনের প্রভাব অপ্রতুল।

আইন ও এর প্রয়োগ:

১৯৬০ সালের পুরোনো আইন বাতিল করে ২০১৯ সালে প্রণীত 'প্রাণিকল্যাণ আইন' অনুযায়ী প্রাণীদের ওপর নিষ্ঠুরতা, নির্যাতন, অবহেলা, হত্যার জন্য সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। কিন্তু আইনটির প্রচারণার অভাব, জটিল প্রয়োগ প্রক্রিয়া এবং মামলা কার্যক্রমে অনেক সময় এবং অর্থের প্রয়োজন হয় যার কারণে অনেক ঘটনা মামলায় পরিনত হয়না। তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘ এবং জটিল হওয়ায় অপরাধীরা সহজে পার পেয়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনের আওতায় প্রাণিকল্যাণ আইনটি এখনো তফসিলভুক্ত হয়নি যা বিচার প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তুলেছে।

ঘটনার উদাহরণ:

  • ২০১৯ সালের মার্চ: রাজধানীর গোপীবাগে একটি বিড়াল হত্যা ও তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেটে ফেসবুকে ছবি ও ভিডিও পোস্ট করা।
  • ২০২০-এর জানুয়ারি: রাজধানীর ধলপুরে রড, সাঁড়াশি ও প্রাণঘাতী ইনজেকশন দিয়ে প্রায় ২০টি কুকুর হত্যা।
  • বিভিন্ন সময়: রাস্তার কুকুরের বিষপ্রয়োগে হত্যা, পোষা প্রাণীদের অবহেলা এবং নিষ্ঠুর আচরণ সহ অসংখ্য ঘটনা।

প্রতিবন্ধকতা:

প্রাণী নির্যাতন মামলায় প্রধান প্রতিবন্ধকতা হলো আইনের দুর্বল প্রয়োগ, প্রচারণার অভাব, তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘতা এবং জটিলতা। অনেক ক্ষেত্রে মামলা কারীদের সামাজিক বিদ্রূপ ও হুমকির মুখোমুখি হতে হয়। প্রভাবশালী আসামিরা সহজেই পার পেয়ে যায়। মানুষের মধ্যে প্রাণী প্রতি সহানুভূতি ও সচেতনতা বৃদ্ধি করার আবশ্যকতা অপরিহার্য।

সংগঠন ও ব্যক্তিদের ভূমিকা:

বাংলাদেশে কয়েকটি এনজিও এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রাণী অধিকার রক্ষায় কাজ করছে। তাদের মধ্যে 'পিপল ফর অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন', 'কেয়ার ফর পজ', 'পিংক সিটি অ্যানিমেল রাইটস অ্যান্ড সার্ভিসেস' উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও অনেক ব্যক্তি এই ক্ষেত্রে কাজ করছেন তবে তাদের সীমিত সম্পদ এবং সরকারি সহায়তার অভাব তাদের কাজে বাধা সৃষ্টি করছে।

সমাধান:

প্রাণী নির্যাতন বন্ধে আইনের কঠোর প্রয়োগ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা, প্রাণী প্রতি সচেতনতা বৃদ্ধি, শিক্ষা এবং জনসচেতনতা অভিযান অত্যন্ত জরুরি। প্রাণীদের প্রতি মানবিক আচরণ এবং সহানুভূতি বৃদ্ধি করা জরুরি। সরকারের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে সমন্বিত পরিকল্পনা এবং কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানানো হচ্ছে।

string

মূল তথ্যাবলী:

  • ২০১৯ সালে প্রণীত প্রাণিকল্যাণ আইন প্রয়োগে অনীহা ও জটিলতা বিদ্যমান।
  • আইনের দুর্বল প্রয়োগের কারণে প্রাণী নির্যাতন বন্ধ হচ্ছে না।
  • রাস্তার কুকুর, বিড়াল, অন্যান্য প্রাণী নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
  • প্রাণী অধিকার রক্ষায় কাজ করা সংগঠন ও ব্যক্তিদের সীমিত সম্পদ ও সরকারি সহযোগিতার অভাব।
  • আইনের কঠোর প্রয়োগ, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সরকারি সহযোগিতার মাধ্যমে প্রাণী নির্যাতন রোধ সম্ভব।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - প্রাণী নির্যাতন

৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, ৬:০০ এএম

কুকুরদের উপর নির্যাতন করা হয়েছিল।

১ এপ্রিল ২০২৪, ৬:০০ এএম

প্রাণী নির্যাতনের প্রথম মামলা দায়ের করা হয়।

জাপান গার্ডেন সিটিতে ১০টি কুকুর ও একটি বিড়াল বিষক্রিয়ায় মারা গেছে।