শান্তি

শান্তি: এক অপরিসীম আকাঙ্ক্ষা

মানব সভ্যতার ইতিহাস হল যুদ্ধ ও সংঘাতের ইতিহাস। তবে, শান্তি সর্বদাই মানুষের এক অপরিসীম আকাঙ্ক্ষা ছিল। শান্তি কী? এর সংজ্ঞা সহজ নয়। এটি কেবল যুদ্ধের অনুপস্থিতি নয়, বরং ন্যায়বিচার, সমতা, ও সহাবস্থানের অবস্থা। প্রাচীন কাল থেকেই বিভিন্ন ধর্ম ও দর্শন শান্তির উপর গুরুত্বারোপ করেছে। বৌদ্ধ ধর্মে দুঃখ দূর করে শান্তি অর্জনের কথা বলা হয়, খ্রিস্টান ধর্মে যীশুকে শান্তির রাজপুত্র হিসেবে দেখা হয়, আর ইসলামে শান্তিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

বিংশ শতাব্দীর দুটি বিশ্বযুদ্ধ বিশ্বকে ভয়াবহ ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছিল। এই যুদ্ধের পরই বিশ্বের নেতারা শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থা গঠন করে। তবুও, বিশ্বে সংঘাত ও যুদ্ধ বন্ধ হয়নি। কুয়েত যুদ্ধ, কোরিয়া যুদ্ধ, আরও অনেক সংঘাত শান্তির আশা কেড়ে নিয়েছে। মার্টিন লুথার কিং-এর মতো ব্যক্তিত্বরা শান্তির প্রতি আন্দোলন করে গেছেন। তারা শান্তিকে ন্যায়বিচারের সঙ্গে জড়িয়ে দেখেছেন। নোবেল শান্তি পুরষ্কার বিশ্ব শান্তির জন্য অবদান রাখা ব্যক্তিদের সম্মান জানায়।

বাংলাদেশের প্রেক্ষিতেও শান্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মুক্তিযুদ্ধের পর পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিবাহিনীর সশস্ত্র সংগ্রাম দীর্ঘদিন ধরে চলেছে। শেষ পর্যন্ত ১৯৯৭ সালে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তি দীর্ঘদিনের সংঘাতের অবসান ঘটায়। তবে, অভ্যন্তরীণ শান্তি, মানসিক শান্তিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ধ্যান, যোগ, প্রার্থনা ইত্যাদির মাধ্যমে মানুষ মানসিক শান্তি অর্জন করতে পারে।

শান্তি একটি সার্বজনীন আকাঙ্ক্ষা। এটি কেবল রাষ্ট্রীয় নীতির বিষয় নয়, বরং ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সামাজিক ন্যায়বিচার, সমতা, আর সহাবস্থান শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য অপরিহার্য।

মূল তথ্যাবলী:

  • বিশ্ব শান্তির জন্য জাতিসংঘের ভূমিকা
  • মার্টিন লুথার কিং এর শান্তি আন্দোলন
  • নোবেল শান্তি পুরষ্কার
  • পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি চুক্তি
  • ধর্ম ও দর্শনের শান্তি দর্শন
  • মানসিক শান্তির গুরুত্ব