এরশাদ আলী

এরশাদ আলী: বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের এক অসাধারণ বীর মুক্তিযোদ্ধা

১৯৩৫ সালে জন্মগ্রহণকারী এরশাদ আলী ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে অসীম বীরত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন। নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার বিষ্ণবপুর গ্রামে তার পৈতৃক বাড়ি। তার বাবার নাম আলী মিয়া এবং মায়ের নাম আসমতের নেছা। তিনি ইপিআরে কর্মরত ছিলেন এবং ১৯৭১ সালে দিনাজপুর ইপিআর সেক্টরের রংপুর উইংয়ে কর্মরত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে।

তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান ছিল তিস্তা রেলসেতুতে ২ এপ্রিল ১৯৭১ সালে সংঘটিত ভয়াবহ যুদ্ধে। ২৫ মার্চের পর রংপুর ইপিআর উইংয়ের বাঙালি সেনারা কাউনিয়ায় অবস্থান নিয়েছিল। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আক্রমণের মুখে তারা কৌশলগতভাবে পিছু হটে তিস্তা রেলসেতুর কুড়িগ্রাম প্রান্তে অবস্থান নেয়। সেখানে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ইপিআর সেনা, পুলিশ, আনসার এবং ছাত্র-জনতা তাদের সাথে যোগ দেন। তারা সেতুতে প্রতিরোধ গড়ে তুলে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ট্রেনে আক্রমণ চালায় এবং মেজরসহ অনেক পাকিস্তানি সেনাকে নিহত করে।

এই যুদ্ধে এরশাদ আলী অদম্য সাহস ও বীরত্বের পরিচয় দেন। তবে পরবর্তীতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ভারী অস্ত্রশস্ত্রের আক্রমণের মুখে মুক্তিযোদ্ধারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এরশাদ আলী শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানি সেনাদের গুলিতে বুকে আঘাত পেয়ে শহীদ হন। তার সাহসিকতা ও ত্যাগের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর উত্তম খেতাব প্রদান করে। তার গেজেট নম্বর ৫৬। তার স্ত্রীর নাম মোসাম্মৎ নুরুন নেছা এবং তাদের এক মেয়ে ছিল। এরশাদ আলীর স্মৃতি চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে বাংলাদেশের ইতিহাসে।

মূল তথ্যাবলী:

  • এরশাদ আলী ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা
  • তিনি তিস্তা রেল সেতুর যুদ্ধে অসাধারণ বীরত্ব দেখিয়েছিলেন
  • তাকে বীর উত্তম খেতাব প্রদান করা হয়েছে
  • তিনি ১৯৭১ সালে শহীদ হন
  • তার পৈতৃক বাড়ি নোয়াখালীতে

গণমাধ্যমে - এরশাদ আলী

১৮ ডিসেম্বর ২০২৪

মো. শুভ'র বাবা এরশাদ আলী তার ছেলের মৃত্যুর কথা জানিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন।