ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড কোর (আইআরজিসি): একটি বিস্তারিত বিশ্লেষণ
ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড কোর (আইআরজিসি) হলো ইরানের একটি অত্যন্ত প্রভাবশালী সামরিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সংগঠন। ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পরে ইসলামি শাসন ব্যবস্থাকে রক্ষা করার জন্য এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। আইআরজিসি দেশের নিয়মিত সেনাবাহিনীর পাশাপাশি একটি স্বাধীন সামরিক শক্তি হিসাবে কাজ করে। এটির নিজস্ব স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনী রয়েছে, এবং এর আনুমানিক সদস্য সংখ্যা প্রায় ১৯০,০০০।
আইআরজিসি শুধুমাত্র সামরিক কাজেই সীমাবদ্ধ নয়; এটি ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু কর্মসূচি পরিচালনা করে। এছাড়া, এর একটি বিশাল ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য রয়েছে, যা প্রতিরক্ষা, প্রকৌশল, নির্মাণ এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে অনেক কোম্পানির মালিক। ফলে, এটি ইরানের অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আইআরজিসির একটি বৈদেশিক কার্যক্রম বিভাগও রয়েছে যার নাম কুদস ফোর্স। কুদস ফোর্স মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন সংগঠনকে অস্ত্র, অর্থ এবং প্রশিক্ষণ সরবরাহ করে। লেবাননের হেজবুল্লাহ, ইরাকের শিয়া মিলিশিয়া এবং সিরিয়ার বিভিন্ন গোষ্ঠী এই সহায়তা পেয়ে থাকে।
দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আইআরজিসি বাসিজ প্রতিরোধ বাহিনী নামক একটি আধা-সামরিক বাহিনীকেও নিয়ন্ত্রণ করে। সরকারবিরোধী আন্দোলন দমনে বাসিজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আইআরজিসি নিয়ে বিতর্কের অভাব নেই। যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশ একে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে এবং এর উপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। অন্যদিকে, ইরান আইআরজিসিকে দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার প্রতিরক্ষার জন্য অপরিহার্য অংশ হিসেবে দেখে।
আইআরজিসির ভবিষ্যৎ এবং এর আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ভূমিকা নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। এটি ইরানের রাজনীতি, অর্থনীতি এবং সামরিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে ধারণা করা হয়। আইআরজিসির কার্যকলাপের প্রভাব মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে।