তেহরান

তেহরান: ইরানের রাজধানী ও গৌরবময় শহর

তেহরান (ফার্সি: تهران) ইরানের রাজধানী এবং তেহরান প্রদেশের প্রশাসনিক কেন্দ্র। প্রায় ৮৭ লক্ষ জনসংখ্যা নিয়ে এটি ইরানের সবচেয়ে জনবহুল শহর এবং পশ্চিম এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ মহানগর। আলবুর্জ পর্বতশ্রেণীর পাদদেশে অবস্থিত এই শহরটির অতীত ঐতিহাসিক ঘটনায় ভরা, বর্তমানে এটি দ্রুত অগ্রসরমান একটি আধুনিক মহানগর।

ঐতিহাসিক তথ্য:

প্রাচীনকালে বর্তমান তেহরানের অঞ্চলে রেই নামক একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর ছিল। মিডিয়ান সাম্রাজ্যের অধীনে রেই একটি বিশিষ্ট শহর ছিল, পরে আরব, তুর্কি ও মঙ্গোল আক্রমণের কবলে পড়ে ধ্বংস হয়। ১৭৮৬ সালে কাজার রাজবংশের আগা মোহাম্মদ খান তেহরানকে ইরানের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করেন। রাজনৈতিক ও ভৌগোলিক কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ১৯২০-এর দশক থেকে তেহরানে ব্যাপক উন্নয়ন ও পুনর্নির্মাণ শুরু হয়।

গুরুত্বপূর্ণ স্থান:

তেহরানে ঐতিহাসিক ও আধুনিক অনেক স্থাপত্যই রয়েছে। গোলেস্তান প্রাসাদ, সাদাবাদ প্রাসাদ, নিয়াভারান প্রাসাদ, আজাদি মিনার, মিলাদ টাওয়ার, তাবিয়াত সেতু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

জনসংখ্যা ও ভাষা:

তেহরানের অধিকাংশ বাসিন্দা পারসিক। ফার্সি ভাষাই তাদের মাতৃভাষা। তবে, অন্যান্য জাতিগত ও ভাষাগত গোষ্ঠীও এখানে বাস করে।

অর্থনীতি:

তেহরান ইরানের অর্থনৈতিক কেন্দ্র। বেশিরভাগ শিল্প প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এখানেই অবস্থিত।

পরিবহন:

তেহরানে উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা রয়েছে। ইমাম খোমেনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, মেহরাবাদ বিমানবন্দর, মেট্রো, বাস পরিষেবা, রেলওয়ে ইত্যাদি।

পরিবেশ:

বায়ু দূষণ ও ভূমিকম্পের ঝুঁকির কারণে তেহরান থেকে রাজধানী স্থানান্তরের পরিকল্পনা বহুবার আলোচিত হলেও এখনও তা বাস্তবায়িত হয়নি।

সংস্কৃতি ও পর্যটন:

তেহরান ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও পর্যটন কেন্দ্র। জাদুঘর, প্রাসাদ, বাজার ইত্যাদি পর্যটকদের আকর্ষণ করে।

শিক্ষা:

তেহরান ইরানের বৃহত্তম শিক্ষা কেন্দ্র। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখানে অবস্থিত।

শেষকথা:

তেহরান ইতিহাস ও আধুনিকতার এক অসাধারণ সমন্বয়। এটি ইরানের মুখ, তার অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু। শহরটির দ্রুত অগ্রযাত্রা ও সমস্যাগুলোর সমাধানের জন্য ক্রমাগত উন্নয়ন ও পরিবর্তন চলছে।

মূল তথ্যাবলী:

  • তেহরান ইরানের রাজধানী ও সবচেয়ে জনবহুল শহর।
  • ১৭৮৬ সালে আগা মোহাম্মদ খান তেহরানকে রাজধানী ঘোষণা করেন।
  • ঐতিহাসিক গোলেস্তান প্রাসাদ, আজাদি মিনার, মিলাদ টাওয়ার উল্লেখযোগ্য স্থাপনা।
  • তেহরান ইরানের অর্থনৈতিক কেন্দ্র।
  • বায়ু দূষণ ও ভূমিকম্পের ঝুঁকি তেহরানের বড় সমস্যা।